দিল্লি, 26 জুন : কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে কখনও আনলেন জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ । কখনও আবার হাতিয়ার করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে ।
দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মঙ্গলবার লোকসভায় প্রথমবার ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদি । ভাষণের অনেকটা অংশজুড়ে ছিল তাঁর প্রথম পাঁচ বছরের সাফল্যের গুণগান । কীভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর সরকার, সে কথাই বারবার উঠে এল তাঁর ভাষণের মধ্যে দিয়ে । পাশাপাশি, জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না । বললেন, " আজ ২৫ জুন। এই দিনেই দেশের আত্মাকে পিষে মারা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল যে, সেই আতঙ্কের কথা মনে হলে এখনও আত্মা কেঁপে ওঠে।" আবার, মুসলিম মহিলাদের ক্ষমতায়ন না করার জন্য কংগ্রেসকে দুষতেও ছাড়লেন না । তাঁর দাবি, দেওয়ানি বিধি ও শাহ বানো মামলার ভুল শোধরাতে কংগ্রেস তিন তালাক বিলে সমর্থন করুক ।
তখন বিরোধী আসনে বসে সনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি থেকে শুরু করে অধীর চৌধুরিরা । নিজের সরকারের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না । দিনটা ছিল 25 জুন । 44 বছর আগে এ দিনেই জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা । মোদির ভাষণে উঠে এল সে দিনের প্রসঙ্গ । কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, "সাংবাদিকদের জেলে পোরা হয়েছিল । নেতাদের বন্দি করা হয়েছিল ।" লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরি সোমবারই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন । বলেছিলেন, সনিয়া গান্ধি বা কংগ্রেসের কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকলে তাঁদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়নি কেন ? অধীরকে কটাক্ষ করে মোদির জবাব, "আমরা সরকার চালাই । আইন ব্যবস্থা চালাই না । আমরা কাউকে জেলে পুরতে চাই না ।" মোদী আরও একটু রসিকতা জুড়ে বললেন, ‘‘কেউ যদি জামিনে মুক্ত থাকেন, তো সেটা উপভোগ করুন।’’
প্রথম পর্বে যাঁকে বার বার বিঁধেছিলেন, মঙ্গলবার কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে সেই মনমোহনই ছিলেন মোদির অন্যতম হাতিয়ার । মোদী বলেন, ‘‘নরসিংহ রাও এবং ইউপিএ-র প্রথম দফার পরে মনমোহন সিংকে ভারতরত্ন দেওয়া কথা ভাবা হয়নি। পরিবারের বাইরের লোকেরা কিছুই পান না। অথচ দল নয়, প্রণবদার অবদানের কথা বিবেচনা করে আমরা তাঁকে ভারতরত্ন দিয়েছি।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, আধুনিক ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে অনেকটা এগিয়েছে ভারত । তাঁর কথায়, "চন্দ্রযান অভিযানও হবে, হাইওয়ে হবে, রেললাইন আরও বাড়াতে হবে ।" নেহরুর পথ ধরে সকলকে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন মোদি ।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি একদিকে গরিবের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে হবে । অন্যদিকে উন্নয়ন পরিকাঠামোরও উন্নতি করতে হবে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, "পাঁচ বছর আগে বলেছিলাম আমাদের সরকার গরিবের সরকার । আর পাঁচ বছর পর বলতে পারি সাধারণ মানুষ আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন ।"