দিল্লি, 11 জুন : আজ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের 95 তম বার্ষিক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন উপলক্ষে অনলাইন বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই বাংলায় কথা বলতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীকে ৷ শুরুতেই তিনি স্পষ্ট বাংলায় বললেন, "নমস্কার ৷ আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন ৷"
পশ্চিমবঙ্গে পাটচাষিদের কথা উঠে এল তাঁর কথায় ৷ "পাট চাষিদের জন্য পাট চাষের জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলিকে আরও মজবুত করতে হবে ৷ আদিবাসীদের সম্প্রদায়গুলিকে তাদের ক্ষেত্রের মধ্যেই আধুনিক প্রসেসিং ইউনিট তৈরি করে দিতে হবে ৷" তিনি বলেন, "সিকিমের মতো পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতে অর্গ্যানিক হাব তৈরি করা যেতে পারে ৷ জৈব পণ্যগুলি নিয়ে গোটা বিশ্বে জায়গা বানানো যেতে পারে ৷"
কলকাতা নিয়েও আশা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৷ তা নিজের বক্তব্যেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি ৷ বললেন, "কলকাতা ফের দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে ৷ অতীতের গৌরব থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতে কলকাতা সামগ্রিক ক্ষেত্রের নেতৃত্ব করতে পারে ৷"
তাঁর আজকের ভাষণেও উঠে এল আত্মনির্ভর ভারতের কথা ৷ তিনি বলেন, "এই বিপদকে সুযোগের মধ্যে পরিবর্তন করতে হবে ৷ এটাকে আমাদের দেশের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে তৈরি করতে হবে ৷ এই টার্নিং পয়েন্টটিই হল আত্মনির্ভর ভারত ৷ এই আত্মনির্ভরতার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভারতীয়রা বাঁচছে ৷ কিন্তু, তারপরও একটা বড় যদি সকল ভারতীয়র মনে থেকে গিয়েছে ৷ সব ভারতীয় মনে করে, যদি আমরা মেডিকেলের ইকুইপমেন্টের দিক থেকে আত্মনির্ভর হতাম ৷ যদি আমরা বিভিন্ন উৎপাদনের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতাম ৷ যদি আমরা কয়লা বা খনিজের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতাম ৷ এরকম অগুনতি যদি মানুষের মনে রয়ে গিয়েছে ৷ বিগত পাঁচ-ছয় বছরে দেশের রীতিনীতিতে ভারতের আত্মনির্ভরতার লক্ষ্য সর্বপরি রয়েছে ৷ কোরোনা সংক্রমণ এই লক্ষ্যের গতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ৷"
দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে ৷ ভারতকে অন্য দেশের উপর যত কম নির্ভর হতে হয় সেই বিষয়েও স্পষ্ট বার্তা দিলেন মোদি ৷ বললেন, যে সমস্ত জিনিস ভারতে আমদানি করা হয়, সেগুলি কীভাবে এখানেই উৎপাদন করা সম্ভব সেই বিষয়ে নজর দিতে হবে ৷ পরবর্তী সময়ে সেই জিনিস রপ্তানি ভারত থেকেই করতে হবে ৷ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত কোটি কোটি গরিব এমন অনেক কিছু তৈরি করে, যা এখানে পাওয়া যায়, সেগুলি ছেড়ে বিদেশ থেকে ওই একই জিনিস কিনে আনার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ৷ দেশের ছোটো ব্যবসায়ীদের থেকে জিনিস কিনলে শুধু আমরা তাদের টাকায় দিই না ৷ তাদের সম্মানও বাড়াই ৷ তাই এবার "লোকালের জন্য ভোকাল" হওয়ার সময় এসেছে ৷
তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে স্বামী বিবেকানন্দের নাম ৷ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা এক চিঠি নিয়ে আলোচনা করলেন তিনি ৷ তাঁর লেখা চিঠি কোরোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতকে অনুপ্রেরণা জোগায় ৷ ভারতকে লড়াই করতে সহায়তা করে ৷ যুব সমাজকে দেশের সাহায্য করতে এগিয়ে আসার আহ্বান দেন মোদি ৷ আগেই আত্মনির্ভর ভারতের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছিলেন ৷ আজে ফের প্রধানমন্ত্রীর গলায় শোনা গেল একই কথা ৷ তিনি বলেন, দেশের যে কোনও জায়গায় কৃষকরা তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে পারবেন ৷
আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে বাস্তবায়িত করতে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন মোদি ৷ এই অভিযানকে বাস্তবায়িত করতে তারাও যেন 50-100টি লক্ষ্য তৈরি করে ৷ যে লক্ষ্যগুলি সংস্থা, ব্যবসা ও প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য হোক ৷ এটা দেশকে আরও আগে নিয়ে যাবে ৷ উৎপাদন ক্ষেত্রে বাংলার ঐতিহাসিক কাজগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে ৷ "আমরা সবসময় শুনে আসছি, বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত তা কাল ভাবে ৷ এটা থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে ৷"