ETV Bharat / bharat

আর্থিকভাবে আত্মনির্ভর হবেন কীভাবে? - আত্মনির্ভর

কঠিন সময়ে নিজেকে আর্থিক দিক থেকে তৈরি রাখবেন কীভাবে ? চারটে সহজ পথে নিজের অর্থ ব্যয় করে আত্মনির্ভর হওয়া যায় ।অর্থনীতির সাংবাদিক কুমার শংকর রায় ।

Financially atma nirbhar
মধ্যবিত্ত ঘরে আর্থিকভাবে আত্মনির্ভর
author img

By

Published : Jun 18, 2020, 7:35 AM IST

হায়দরাবাদ, 17 জুন : প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির ঐতিহাসিক আত্মনির্ভর ভারত যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে । যেকোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আত্মনির্ভর হওয়া খুব ভালো একটা উপায় । কারণ ভবিষ্যতে বিপদ যে কোনও দিক থেকে আসতে পারে । সুতরাং আত্মনির্ভর হওয়ার ভার নিজেদের উপর বর্তায় । যখন নিজেদের টাকা খরচ করে আত্মনির্ভর হতে হয় তখন কীভাবে একজন আত্মনির্ভর হবেন ? কঠিন সময়ে নিজেকে আর্থিক দিক থেকে তৈরি রাখবেন কীভাবে ? চারটে সহজ পথে নিজের অর্থ ব্যয় করে আত্মনির্ভর হওয়া যায় ।

বিপদের সময় ব্যবহার করা যাবে এরকম নগদ অর্থ জমিয়ে রাখুন । যখন বিপদ আসে তখন নিজেকে তৈরি করার সময় থাকে না । এই সময় বেতন বা আয়ে কাটছাঁট হয় । সেইসময় EMI দেওয়া ও অন্যান্য অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে । এমনকী অনেকের চাকরি চলে যেতে পারে । আগের বেতনে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । সেইসময় আপনাকে সাহায্য করবে আপনার জমানো পুঁজি । সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরে নির্দিষ্ট কিছু মাসিক খরচ আছে । এর পাশাপাশি EMI ও অন্যান্য আর্থিক খরচ রয়েছে । এটা প্রত্যেক মাসে 30 হাজার টাকা থেকে 1 লাখ টাকার উপর হতে পারে । আপৎকালীন সঞ্চায় মূল‍্যের লক্ষ্য 12 মাসের খরচ এবং EMI দেওয়া । এর জন্য পাঁচ থেকে ছ'লাখ টাকা আপৎকালীন সঞ্চয় রাখতে হবে । এর পাশাপাশি প্রত্যেক মাসে কম করে তিন হাজার টাকা করে ব‍্যাঙ্কে জমা রাখুন । যখন হাতে কিছু অতিরিক্ত নগদ অর্থ থাকবে তখন তা আপৎকালীন সঞ্চয় হিসেবে রেখে দিন । জরুরী আর্থিক পরিস্থিতিতে পড়লে খুব সহজে নিজেকে সামলাতে পারবেন । খারাপ সময় আসুক বা না আসুক আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন ।

নিজেকে এবং পরিবারকে চিকিৎসা বিমা দ্বারা সুরক্ষিত রাখুন । বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে একজন রোগীর জন্য কতটা বিল দিতে হয় তা সবার জানা । সরকারি হাসপাতালে খরচা কম । কিন্তু সেখানে চিকিৎসার মান এবং রোগী দেখাশোনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সন্দেহ আছে । সেজন্য কেউ অসুস্থ হলে আগে বেসরকারি হাসপাতালে মানুষ ছুটে যায় । বেসরকারি হাসপাতালে সাত থেকে দশ দিনের চিকিৎসা পাঁ থেকে 10 লাখ টাকা খুব সাধারণ ব্যাপার । প্রত্যেক বছর এই টাকা ব্যয় করা সহজ নয় । যদি কারওর কাছে টাকা না থাকে তাহলে গয়না ও বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করতে হয় । কিন্তু চিকিৎসা বিমা করা থাকলে এসব পোহাতে হয় না । প্রত্যেক বছর অল্প করে টাকা জমালে একসময় স্বাস্থ্য বিমার টাকা বড় অঙ্কে পরিণত হয় । পরিবারের তিন সদস্যের জন্য বছরে 20 হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে এক কোটি টাকার স্বাস্থ্য বিমা করা যেতে পারে । যদি আপনার আয় কম হয় তাহলে এক কোটি টাকার পরিবর্তে 10 থেকে 15 লাখ টাকার বিমা করতে পারেন । কিছু সংস্থা কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা পলিসি রেখেছে । কিন্তু সেই পলিসির মধ্যে বয়স্ক অভিভাবকরা যুক্ত নন । তার থেকে বরং আপনি নিজে স্বাস্থ্য বিমা করিয়ে রাখুন পুরো পরিবারের জ

অবসরের পর পেনশনের জন্য আগে থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিন । অবসর মানে কোনও বেতন নেই । প্রত্যেক মাসের 30 তারিখে ব‍্যাঙ্কের SMS আপনার মোবাইলে ঢুকবে না । অনেক ক্ষেত্রে বয়সের আগে অবসর নিতে বাধ্য করা হয় । যদি প্রাইভেট পেনশন প্ল্যানে কেউ ইনভেস্ট করেন, তাহলে তিনি আত্মনির্ভর হতে পারবেন । ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের সঙ্গে মারুতি সুজ়ুকি একটি পেনশন প্ল‍্যান এনেছে । তাতে প্রত্যেক মাসে দু'হাজার টাকা করে 25 বছর বয়স থেকে জমালে, 55 বছর বয়সে গিয়ে 46 লাখ টাকা পাবেন । বছরে 10 শতাংশ রিটার্ন পাবেন । জীবন বিমা করে রাখুন । একজন 30 বছর বয়সের ব্যক্তি প্রতিদিন 50 টাকা ব্যয় করে দু'কোটি টাকা পর্যন্ত জীবন বিমা করতে পারেন । যদি অসময় কারওর মৃত্যু হয়, তাহলে তাঁঁর পরিবার দু'কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থ পাবেন । এর ফলে আপনার পরিবার আত্মনির্ভর হবে ।

(লেখক- কুমার শংকর রায় , অর্থনীতির সাংবাদিক, ব‍্যক্তিগত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ)

হায়দরাবাদ, 17 জুন : প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির ঐতিহাসিক আত্মনির্ভর ভারত যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে । যেকোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আত্মনির্ভর হওয়া খুব ভালো একটা উপায় । কারণ ভবিষ্যতে বিপদ যে কোনও দিক থেকে আসতে পারে । সুতরাং আত্মনির্ভর হওয়ার ভার নিজেদের উপর বর্তায় । যখন নিজেদের টাকা খরচ করে আত্মনির্ভর হতে হয় তখন কীভাবে একজন আত্মনির্ভর হবেন ? কঠিন সময়ে নিজেকে আর্থিক দিক থেকে তৈরি রাখবেন কীভাবে ? চারটে সহজ পথে নিজের অর্থ ব্যয় করে আত্মনির্ভর হওয়া যায় ।

বিপদের সময় ব্যবহার করা যাবে এরকম নগদ অর্থ জমিয়ে রাখুন । যখন বিপদ আসে তখন নিজেকে তৈরি করার সময় থাকে না । এই সময় বেতন বা আয়ে কাটছাঁট হয় । সেইসময় EMI দেওয়া ও অন্যান্য অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে । এমনকী অনেকের চাকরি চলে যেতে পারে । আগের বেতনে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । সেইসময় আপনাকে সাহায্য করবে আপনার জমানো পুঁজি । সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরে নির্দিষ্ট কিছু মাসিক খরচ আছে । এর পাশাপাশি EMI ও অন্যান্য আর্থিক খরচ রয়েছে । এটা প্রত্যেক মাসে 30 হাজার টাকা থেকে 1 লাখ টাকার উপর হতে পারে । আপৎকালীন সঞ্চায় মূল‍্যের লক্ষ্য 12 মাসের খরচ এবং EMI দেওয়া । এর জন্য পাঁচ থেকে ছ'লাখ টাকা আপৎকালীন সঞ্চয় রাখতে হবে । এর পাশাপাশি প্রত্যেক মাসে কম করে তিন হাজার টাকা করে ব‍্যাঙ্কে জমা রাখুন । যখন হাতে কিছু অতিরিক্ত নগদ অর্থ থাকবে তখন তা আপৎকালীন সঞ্চয় হিসেবে রেখে দিন । জরুরী আর্থিক পরিস্থিতিতে পড়লে খুব সহজে নিজেকে সামলাতে পারবেন । খারাপ সময় আসুক বা না আসুক আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন ।

নিজেকে এবং পরিবারকে চিকিৎসা বিমা দ্বারা সুরক্ষিত রাখুন । বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে একজন রোগীর জন্য কতটা বিল দিতে হয় তা সবার জানা । সরকারি হাসপাতালে খরচা কম । কিন্তু সেখানে চিকিৎসার মান এবং রোগী দেখাশোনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সন্দেহ আছে । সেজন্য কেউ অসুস্থ হলে আগে বেসরকারি হাসপাতালে মানুষ ছুটে যায় । বেসরকারি হাসপাতালে সাত থেকে দশ দিনের চিকিৎসা পাঁ থেকে 10 লাখ টাকা খুব সাধারণ ব্যাপার । প্রত্যেক বছর এই টাকা ব্যয় করা সহজ নয় । যদি কারওর কাছে টাকা না থাকে তাহলে গয়না ও বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করতে হয় । কিন্তু চিকিৎসা বিমা করা থাকলে এসব পোহাতে হয় না । প্রত্যেক বছর অল্প করে টাকা জমালে একসময় স্বাস্থ্য বিমার টাকা বড় অঙ্কে পরিণত হয় । পরিবারের তিন সদস্যের জন্য বছরে 20 হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে এক কোটি টাকার স্বাস্থ্য বিমা করা যেতে পারে । যদি আপনার আয় কম হয় তাহলে এক কোটি টাকার পরিবর্তে 10 থেকে 15 লাখ টাকার বিমা করতে পারেন । কিছু সংস্থা কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা পলিসি রেখেছে । কিন্তু সেই পলিসির মধ্যে বয়স্ক অভিভাবকরা যুক্ত নন । তার থেকে বরং আপনি নিজে স্বাস্থ্য বিমা করিয়ে রাখুন পুরো পরিবারের জ

অবসরের পর পেনশনের জন্য আগে থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিন । অবসর মানে কোনও বেতন নেই । প্রত্যেক মাসের 30 তারিখে ব‍্যাঙ্কের SMS আপনার মোবাইলে ঢুকবে না । অনেক ক্ষেত্রে বয়সের আগে অবসর নিতে বাধ্য করা হয় । যদি প্রাইভেট পেনশন প্ল্যানে কেউ ইনভেস্ট করেন, তাহলে তিনি আত্মনির্ভর হতে পারবেন । ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের সঙ্গে মারুতি সুজ়ুকি একটি পেনশন প্ল‍্যান এনেছে । তাতে প্রত্যেক মাসে দু'হাজার টাকা করে 25 বছর বয়স থেকে জমালে, 55 বছর বয়সে গিয়ে 46 লাখ টাকা পাবেন । বছরে 10 শতাংশ রিটার্ন পাবেন । জীবন বিমা করে রাখুন । একজন 30 বছর বয়সের ব্যক্তি প্রতিদিন 50 টাকা ব্যয় করে দু'কোটি টাকা পর্যন্ত জীবন বিমা করতে পারেন । যদি অসময় কারওর মৃত্যু হয়, তাহলে তাঁঁর পরিবার দু'কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থ পাবেন । এর ফলে আপনার পরিবার আত্মনির্ভর হবে ।

(লেখক- কুমার শংকর রায় , অর্থনীতির সাংবাদিক, ব‍্যক্তিগত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ)

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.