ভুজ, 14 ফেব্রুয়ারি : 68 জন ছাত্রীকে জোর করে বিবস্ত্র করে তাঁরা ঋতুমতী কি না, তার প্রমাণ চাইল কলেজ কর্তৃপক্ষ । গত সপ্তাহে এই ঘটনা ঘটে গুজরাতের ভুজ জেলার এক আবাসিক কলেজে । কলেজের ধর্মীয় নিয়ম রক্ষার্থের জন্যই এমন পদক্ষেপ করেছে, জানায় কলেজ কর্তৃপক্ষ । ছাত্রীদের একাংশ এই অভিযোগ করেছেন । ন্যাশানল কমিশন ফর উওমেনের তরফে এই ঘটনাটির নোট নেওয়া হয়েছে, তারা জানিয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি দল কলেজে পাঠানো হবে ।
গুজরাতের শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধেই অভিযোগ । কলেজটি চালায় স্বামীনারায়ণ সংস্থা । সারা বিশ্বে এই সংস্থা দ্বারা পরিচালিত প্রচুর মন্দির রয়েছে । সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের নিয়ম ঋতুস্রাব চলাকালীন প্রবেশ করা যাবে না কলেজ হস্টেলের রান্নাঘরে । আশেপাশে রয়েছে মন্দির । প্রবেশ করা যাবে না সেখানেও । সহপাঠীদের সংস্পর্শেও আসা যাবে না । এই নিয়মই দীর্ঘদিন চলে আসছে । সম্প্রতি একটি ব্যবহার করা স্যানিটারি ন্যাপকিন কলেজ চত্বরে পাওয়া যায় । এরপরই কলেজ কর্তৃপক্ষ মনে করে ছাত্রীরা নিয়ম পালন করছেন না । 68 জন ছাত্রীকে শৌচাগারে নিয়ে যাওয়া হয় । খুলতে বলা হয় পোশাক । কথা না শুনলে তাঁদের জোর করা হয় । শেষে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে কলেজ কর্তৃপক্ষ 'পরীক্ষা' করে তাঁরা ঋতুমতী কি না ।
ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান ছাত্রীরা । কলেজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার দাবি করেন তাঁরা । এক ছাত্রী জানান, ''আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানকে সম্মান করি । কিন্তু তারা যা করেছে তা ঠিক নয় । আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত । আমরা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়ে প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।''
কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্য জোর করা হয় । ওই ছাত্রী বলেন, "কলেজের প্রিন্সিপাল এবং অন্যান্য কয়েকজন আমাদের ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করেছে । সবকিছু এখন স্বাভাবিক একথা বলার জন্য জোর করা হয়েছে । কর্তৃপক্ষ শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না, আমরা আইনি পদক্ষেপ করব ।" যদিও কলেজের ডিন দর্শনা ঢোলাকিয়ার দাবি, এ বিষয়ে কোনও ছাত্রীকে জোর করা হয়নি। তিনি বলেন, "বিষয়টা হস্টেল সংক্রান্ত । এই ক্ষেত্রে কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত নয় । যা হয়েছে তা ছাত্রীদের অনুমতি নিয়েই । কাউকে জোর করা হয়নি । কেউ ছাত্রীদের শরীরে হাত দেয়নি । ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ।