শাহজাহানপুর, 16 জুন : তার "অপরাধ" বলতে আরও একটু পড়াশোনা করতে চেয়েছিল। তারই মাশুল গুণতে হচ্ছে এখন তাকে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের এক কিশোরী । "এখনই বিয়ে নয়, পড়াশোনা করতে চাই" - এই ইচ্ছাপ্রকাশ করায় বাবা ও ভাই মিলে তাকে খুন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ তুলল ওই কিশোরী। প্রথমে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় তাকে । পরে তাকে মৃত ভেবে ক্যানেলে ফেলে দেয় তার বাবা ও ভাই ।
কিশোরী পুলিশকে বলে, "আমি বাবাকে বলেছিলাম এখনই বিয়ে নয় । পড়াশোনা করতে চাই। একথা শুনে বাবা আমার উপর অত্যাচার শুরু করে । আমায় প্রথমে ক্যানেলের কাছাকাছি একটি জনশূন্য জায়গায় নিয়ে যায় । ভাইও আসে সেখানে । ভাই একটা কাপড় নিয়ে আমার গলা চেপে ধরে, আর বাবা এলোপাথাড়ি ছুরির কোপ মারতে থাকে । আমি অনেক বারণ করেছিলাম, তবুও ওরা শোনেনি । বহুবার জল চেয়েছি, বাবা বা ভাই কেউ একফোঁটা জল নিয়ে এগিয়ে আসেনি। বরং ওরা আমায় ধাক্কা মেরে ক্যানেলে ফেলে দেয় । তার কিছুক্ষণ পর আমি বেঁচে আছি কি না দেখার জন্য বাবা ফের ক্যানেলের কাছে আসে। কিন্তু ততক্ষণে আমি সাঁতার কেটে ওই জায়গা থেকে দূরে চলে যাই ।"
পরিবারের অন্য কেউ এব্যাপারে মুখ না খুললেও, কিশোরীর জামাইবাবু বলেন, "এই ঘটনার আগে ও আমাদের বাড়িতে দু'মাস থাকতে আসে । ওকে ওর বাড়ি থেকে ক্রমাগত বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হত । ঘটনার দু'দিন আগে ওকে আমার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় । আর আজ খবর পাই যে ওকে একটি ক্যানেলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ।" এপ্রসঙ্গে শাহজাহানপুরের ASP দীনেশ ত্রিপাঠী বলেন, "আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখছি । মেয়েটির বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে । প্রমাণের ভিত্তিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।"
সমাজ আজ অনেকটাই এগিয়েছে। বাড়ির মেয়ের পড়াশোনা ব্যাপারে অনেকটাই উদার দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ । তবে, এখনও একটা অংশ রয়ে গেছে সেই তিমিরেই । তাই এখনও পড়াশোনা করতে চাওয়া কিশোরীকে এরকম ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় ।