মুম্বই, 7 মে : মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে কোরোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশেই কালো কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা রয়েছে মৃতদেহ । সম্প্রতি মোবাইলে তোলা এমনই একটি ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । জানা গিয়েছে, ভিডিয়োটি সায়ন হাসপাতালের । এটি শহরের পৌরনিগম দ্বারা পরিচালিত কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য অন্যতম বড় হাসপাতাল ।
কমপক্ষে সাতটি মৃতদেহ এই ওয়ার্ডে দেখা যায় । যেখানে তার পাশেই রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে । কয়েকটি রোগীর পরিবারের সদস্যরাও ওই ওয়ার্ডে উপস্থিত ।
মহারাষ্ট্রের এক BJP বিধায়ক নীতেশ রানে গতকাল ভিডিয়োটি পোস্ট করেন । সঙ্গে লেখেন, "সায়ন হাসপাতালে রোগীরা মৃতদেহের পাশে ঘুমোচ্ছেন । এটি চরম... এ কেমন প্রশাসন! খুবই লজ্জাজনক ।" কংগ্রেসের এক নেতাও এই বিষয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন । প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মিলিন্দ দেওরা টুইট করেন, "সায়ন হাসপাতালে অসুস্থদের পাশে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে ক্ষুব্ধ । বৃহনমুম্বই পৌরনিগম কেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসরণ করছে না ? কম সামগ্রী থাকার পরও হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন । মুম্বই প্রশাসনের এখনই পদক্ষেপ করা দরকার ।"
সায়ন হাসপাতালের ডিন প্রমোদ ইঙ্গ্যালে বলেন, "কোরোনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবার দেহ নিতে নারাজ । এই কারণেই মৃতদেহগুলি সেখানে রাখা হয়েছিল । আমরা দেহগুলি সরিয়ে নিয়েছি । বিষয়টির তদন্ত করছি ।" কেন মৃতদেহগুলি সরানো হয়নি ? ডঃ ইঙ্গ্যালে বলেন, "হাসপাতাল মর্গে 15টি স্লট রয়েছে, যার মধ্যে 11টি ইতিমধ্যে ভরতি করা হয়েছে । যদি আমরা সব মৃতদেহ মর্গে রাখি, তাহলে কোরোনায় যাঁরা মারা যাননি, তাঁদের মৃতদেহের জন্য সমস্যা হবে ।"
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মৃতদেহগুলি স্থানান্তরের জন্য পরিবারের সম্মতির অপেক্ষা করার সময় ভিডিয়োটি করা হয়ে থাকতে পারে । একবার কোনও দেহ কালো ব্যাগে ভরা হয়ে গেলে সংক্রমণ ছড়ানোর আরও কোনও সুযোগ নেই । তবে, কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি ওয়ার্ডের রোগীদের আতঙ্ক কম করতে পারেনি ।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপ বলেন, "সায়ন হাসপাতালের একটি ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । যেখানে দেখা যাচ্ছে, রোগীদের পাশেই মৃতদেহ রাখা হয়েছে । এই নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই । প্রোটোকল অনুযায়ী, কোনও রোগী মারা গেলে সংক্রমণ রুখতে কালো কাপড়ে তাঁকে ঢেকে ফেলা হয় ।" তিনি আরও বলেন, "30 মিনিটের মধ্যে দেহটি তাঁর পরিবারকে নিয়ে নিতে হয় । তবে অনেক সময় তারা দ্বিধাবোধ করে । তখন এটিকে মর্গে রাখা হবে । সমস্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে সময় লাগে । এখন আমরা নির্দেশ দিয়েছি, 30 মিনিটেরও কম সময়ে দেহটি দিয়ে দিতে হবে ।"