ঢাকা, 5 জানুয়ারি: অতীতের বিভিন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রায় 18 কোটি ভোটার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার নাসির উদ্দিন ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে রবিবার এমনই দাবি করেছেন। তাঁর আরও দাবি, এবার থেকে পরিস্থিতিতে চোখে পড়ার মতো বদল আসতে চলেছে। ভোট না দিতে পারার যন্ত্রণায় আর কাউকে ভুগতে হবে না। তবে ঠিক কোন সরকারের সময় এই ঘটনা ঘটেছে তা উল্লেখ করেননি মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার ।
শেখ হাসিনার সরকার পড়ে যাওয়ার পর অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস কয়েকদিন আগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জানান, 2025 সালের শেষ বা 2026 সালের শুরুতে ভোট হতে পারে। সেই সূত্র ধরে, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে 20 জানুয়ারি।
তাঁর আগে নির্বাচনী আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ হচ্ছে। সেভাবেই ঢাকায় আয়োজিত একটি শিবিরে অংশ নিয়ে এদিন বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার নাসির উদ্দিন দাবি করেন, "প্রায় 18 কোটি ভোটার ভোট দিতে পারেননি । আমাদের প্রথম কাজ তাঁদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়া।" ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদপত্রে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন আরও বলা হয়েছে, মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জানান, তাঁরা আসন্ন নির্বাচনের সমস্ত কাজ এভাবেই করছেন যাতে একজনও ভোটারও ভোট দান থেকে বঞ্চিত না হন। এতদিন ধরে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না পেরে মানুষ যে যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে তা শেষ করতে কমিশন দায়বদ্ধও বলে মত মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারের ।
ভোট-তদন্ত
অন্য একটি প্রসঙ্গে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জানান, দেশের শেষ তিনটি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। আর তাই কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, 2014, 2018 এবং 2024 সালের ভোটে কী কী অব্যবস্থা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। নির্বাচনী ইতিহাসে এই তিনটির চেয়ে বেশি বিতর্কিত ভোট আর কখনও হয়নি বলে দাবি মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারের।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিক সংস্কারের পথে হাঁটছে ইউনুস সরকার । নির্বাচন কমিশনও ব্যতিক্রম নয়। পূর্বতন ব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে 21 নভেম্বর মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারের দায়িত্ব নেন নাসির উদ্দিন। সেই তখন থেকেই কাজ শুরু করেছে কমিশন। প্রাথমিক কাজ হিসেবে সংশোধিত ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই কাজ শেষে প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে ভোটার তালিকা তৈরি হবে।
ভোটার তালিকা এবং তারপর...
এই কাজ কবে শেষ হয় তার প্রভাব বাংলাদেশের নির্বাচনের উপর পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু ভোটার তালিকা প্রকাশ করলেই হবে না সেটিকে সংশোধন করার জন্য সঠিক সময় দিতে হবে। নাসিররা জানেন, তালিকা তৈরি চ্যালেঞ্জিং হলেও এর থেকে বড় সমস্যাও তাঁদের অপেক্ষায় আছে । হাসিনার দল গত কয়েকবার বিরোধীদের কার্যত উড়িয়ে বাংলাদেশে ক্ষমতায় এসেছে। অভিযোগ, উঠেছে, এই বিপুল জনমত পেতে তাদের সাহায্য করেছে দেশের প্রশাসন । সাহায্য করেছে পুলিশও। কিন্তু এবারের ভোট যাতে কোনওরকম সমস্যা এবং বিতর্ক ছাড়া আয়োজন করা সম্ভব হয় তার জন্য এখন থেকেই তৎপর নির্বাচন কমিশন ।