দিল্লি, 3 নভেম্বর: দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে প্রতিদিন ৷ বিষাক্ত হয়ে উঠছে বাতাস ৷ রাজধানীর বুকে শ্বাস নেওয়া ক্রমশ দুষ্কর হয়ে উঠেছে ৷ দিল্লি NCR-এ বাতাসের গুণমান সূচক বিপদসীমা পেরিয়েছে ৷ যেখানে AQI 0 থেকে 50-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক নয় বলে ধরা হয় । আজ সকাল থেকেই দিল্লির আকাশ ছিল গাঢ় ধোঁয়াশার চাদরে আচ্ছন্ন ৷ সকালের দিকে বিক্ষিপ্ত কিছু বৃষ্টিপাত হলেও ধোঁয়াশা কমেনি ৷ এদিকে বাতাসের গুণমান সূচক বিপজ্জনক সীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে ৷ আজ সকাল 10টায় বাতাসের গুণমান সূচকে দূষণের মাত্রা ছিল 625 ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজধানীতে আগামীকাল থেকে আবারও জোড়-বিজোড় আইন চালু করা হবে ৷ এই নিয়ে তৃতীয়বার দিল্লিতে জোড়-বিজোড় আইন চালু করা হচ্ছে ৷
পাঞ্জাবিবাগ এবম নারেলা সংলগ্ন অঞ্চলের পরিস্থিতিও গুরুতর ৷ বাতাসের গুণমান সূচক সেখানে 999 ছুঁয়েছে ৷ পাশাপাশি পূর্ব দিল্লির ঝিলমিল শিল্পাঞ্চলের ITI শাদ্রাতে সকাল 9টায় বাতাসের গুণমান সূচক ছিল 889 ৷ আর কে পুরমের কাছে এই সূচক ছিল 749 ৷ মার্কিন দূতাবাসের কাছেও বিপজ্জনক সীমা ছুঁয়েছে বাতাস ৷ নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরগাঁও এবং ফরিদাবাদের কাছে দূষণ সূচক 400 থেকে 709-এর আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে ৷
ধোঁয়াশার কারণে ছিল দৃশ্যমানতা সকাল থেকেই কম ৷ বিমান পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে রাজধানীর বিমানবন্দরে ৷ 32 টি বিমানের গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে ৷ পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ গত শুক্রবার থেকে রাজধানীতে জরুরি জনস্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছে ৷ বছরে প্রথমবার দিল্লিতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হল ৷ বাড়তে থাকা দূষণের প্রভাবে হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও COPD-র রোগীদের স্বাস্থ্য আরও অবনতি হতে পারে ৷ দূষণ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা যত বেশি সম্ভব N-95 মাস্ক ব্যবহার করার জন্য উপদেশ দিচ্ছেন ৷
রাজধানীর জনজীবন আপাতত স্তব্ধ ৷ দীপাবলীর ছুটির পর থেকে যা যা খুলেছিল, সেগুলি আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত ফের বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ শিশুদের শহরের দূষণের থেকে দূরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ দীপাবলীর পর থেকেই দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি গুরুতর হতে শুরু করে ৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, এটি গত পাঁচ বছরে সবথেকে খারাপ অবস্থা ৷ সমগ্র উত্তর ভারতজুড়েই একই সমস্যা চলছে বলেও তিনি বলেন ৷ পরিস্থিতি আরও কঠিন হওয়ার আগে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদনও জানান কেজরিওয়াল ৷ দিল্লি, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার সরকারের পক্ষ থেকে শনিবার যৌথভাবে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করা হয় ৷