দিল্লি, 28 জুন : কোরোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে 15টি দল মোতায়েন করা হয়েছে । সেই দলে রয়েছেন এপিডেমোলজিস্ট, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আধিকারিক,এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অন্য়ান্য বিষয়ে বিষেষজ্ঞ ব্যক্তিরা । গতকাল মন্ত্রিগোষ্ঠীর (GoM) এই তথ্য জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ হর্ষবর্ধন বলেন, দেশের মোট সক্রিয় আক্রান্তের 85 শতাংশই হল 8 রাজ্যের । ওই আটটি রাজ্য হল মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, তামিলনাড়ু, তেলাঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং পশ্চিমবঙ্গের । দেশের 87 শতাংশ মৃত্যুই এই রাজ্যগুলি থেকে ।
মহারাষ্ট্রে মোট কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 1.53 লাখ , মৃত্যু হয়েছে 7 হাজার 106 জনের । দিল্লিতে আক্রান্ত 77 হাজার 240 জন , মৃত্যু হয়েছে 2 হাজার 492 জনের । তামিলনাড়ুর আক্রান্তের সংখ্যা 74 হাজার 622 মৃত 957 জন । আর এই তিন রাজ্য থেকেই দেশের প্রায় 63.7 শতাংশ সক্রিয় কোরোনা আক্রান্ত রয়েছে । গুজরাতে আক্রান্তের সংখ্যা 30 হাজার ছাড়িয়েছে, উত্তর প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা 20 হাজারের বেশি । তেলাঙ্গানায় আক্রান্ত 12 হাজার 349 জন, অন্ধ্র প্রদেশে 11 হাজার 489 জন আক্রান্ত এবং পশ্চিমবঙ্গে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 16 হাজার 190 ।
গত বছর ডিসেম্বরে চিনে কোরোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে । এরপর ভারতে 5 লাখেরও বেশি কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে । বর্তমানে দেশে 1. 98 লাখ সক্রিয় আক্রান্ত রয়েছে । 15 হাজার 685 জনের মৃত্যু হয়েছে ।
গতকাল সকালে সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আনলক-1 শুরু হতেই দু' সপ্তাহ ধরে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে । 22 জুন পর্যন্ত 14 হাজার 821 জন নতুন কোরোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে । নতুন কোরোনা আক্রান্তের খবর পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রী গতকাল ইঙ্গিত করেছেন দেশে কোরোনামুক্তের সংখ্যা 58 শতাংশ ছাড়িয়েছে । মৃত্যুর হার 3.8 শতাংশ । যা আগের তুলনায় অনেকটাই কম ।
চলতি মাসের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জয়েন সেক্রেটারি লাভ আগরওয়াল জানিয়েছিলেন , দেশে মৃত্যুর হার 2.82 শতাংশ । যা বিশ্বের মধ্যে সবথেকে কম । কোরোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে হর্ষবর্ধন বলেছেন, কোরোনা পরীক্ষার জন্য 1 হাজার 26টি ল্যাব রয়েছে । এরমধ্যে 285টি বেসরকারি পরীক্ষাগার । কোরোনা সংক্রমণে WHO থেকে একাধিকবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কোরোনা পরীক্ষা বাড়ানো এবং আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা । স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন, শেষ 24 ঘণ্টায় 2.2 লাখ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে । তার মধ্যে 80 লাখের পরীক্ষা চলছে । একই সঙ্গে হাসপাতালের বেড সংখ্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এই মিটিংয়ে । মুম্বই, দিল্লির মত শহরে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা এত বেশি যে তাদের হাসপাতালে বেড পাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়েছে ।
যদিও দিল্লি সরকার কোরোনা চিকিৎসার জন্য হোটেল, ব্যাঙ্কোয়েট হলে অস্থায়ী কয়েকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলেছে । পাশাপাশি 12.5 লাখ স্কয়্যার ফিটের আধ্যাত্মিক স্থানগুলিকেও কোরোনা চিকিৎসার কাজে লাগানো হচ্ছে । যেখানে 10 হাজার বেডের ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।
মুম্বইতে এই চিত্রটা আরও করুণ । চলতি মাসে সেখানে 99 শতাংশ ICU পুরো ভরতি । GoM এর তরফে জানানো হয়েছে 27 জুন থেকে বেডের সংখ্যা বাড়াতে তারা পদক্ষেপ করবে ।