নয়াদিল্লি, 21 মার্চ : কয়লা দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে (Coal Scam Case) তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সোমবার প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা ধরে জেরা করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) (ED interrogates Abhishek Banerjee) ৷ এদিন নয়াদিল্লিতে ইডি দফতরে যান অভিষেক ৷ আট ঘণ্টার জেরা শেষে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, "আমাকে দ্বিতীয়বার ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি ৷ আমি ওদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছি ৷ আগে যা বলেছিলাম সেই অবস্থানেই অনড় আছি ৷" তাঁর অভিযোগ, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি ৷ কারণ ইডি-সিবিআই বিজেপির সহযোগী ৷ তবে যতই বিব্রত করার চেষ্টা হোক, মাথা নত করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ ৷
তিনি তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন বলে এদিন দাবি করেছেন অভিষেক ৷ বলেছেন, "দেড় বছর আগেও আমাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল । তখন যা বলেছিলাম, এখনও সেই একই কথা বলছি । ইডি বা সিবিআই যদি আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমি ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করতেও রাজি । কিন্তু ওদের কাছে মাথা নত করতে রাজি নই । মাথা নত করতে হলে মানুষের কাছে করব ৷ অকারণ হেনস্থা করার জন্যই দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হচ্ছে । তবে ফের ডাকলেও আমি আসব এবং তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করব ।"
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টে আর্জি খারিজ, কয়লাকাণ্ডে আবারও ম্যারাথন জেরার মুখে অভিষেক
ইডির জেরা শেষে এদিন বিজেপি নেতৃত্বের উদ্দেশে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, "বিজেপি রাজত্বে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি কীভাবে চলছে তা সবাই দেখছে ৷ তৃণমূলকে ভোটে ও গণতান্ত্রিক উপায়ে হারাতে না পেরে এখন ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের মতো এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাতে চাইছে ৷ যদি বিজেপি ভেবে থাকে এতে আমি ভয় পাব, ভয় দেখিয়ে আমায় রাজনীতি থেকে দূরে রাখবে, তাহলে ওরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে ৷ এরফলে আমার সংকল্প আরও দৃঢ় হচ্ছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ৷ হার হজম করতে পারছে না বিজেপি ৷ বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলিতেই কেন কেন্ত্রীয় এজেন্সি পাঠানো হচ্ছে, কেন গুজরাত, অসম, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশে ইডি, সিবিআই তল্লাশি হয় না ? সারদায় যাদের নাম এসেছে, কাগজে মুড়িয়ে যাদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে সেই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না !"
কয়লা ও গরু পাচারকাণ্ডপ্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রকেও আক্রমণ করেছেন অভিষেক ৷ বলেছেন, "বিএসএফ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ৷ তাঁদের নজর এড়িয়ে কী করে সীমান্তে গরু পাচার হয় ? গরু তো কোনও পোকামাকড় নয় । কয়লা চুরি হলে তার দায় কেন্দ্রের অধীনে থাকা সিআইএফএফের, তারাই খনিগুলির দায়িত্বে থাকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে কাজ করে । এগুলো হল হোম মিনিস্টার্স স্ক্যাম ৷ "
অভিষেক এদিন ইডির তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সমন থাকা সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রী দিল্লিতে ইডি দফতরে আসতে পারছেন না, কারণ তাঁর 2 বছরের সন্তান রয়েছে ৷ ই-মেইল করে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি তদন্তকারীদের জানিয়ে দেবেন৷ কলকাতায় রুজিরাকে ডাকা হলে তিনি সেখানে অবশ্যই যাবেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক ৷