কলকাতা, 26 জুন:ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সংঘাত চলছে । রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে জল বণ্টন চুক্তির পুনর্নবীকরণ হয়েছে বলে ক্ষোভপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের তরফে বলা হয় দেশের মধ্যে জলবণ্টনের ক্ষেত্রে রাজ্যের মতামতও নেওয়া হয়েছে। এরপরই মঙ্গলবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, পলিসি ডিসিশনের জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে যে আলোচনার প্রয়োজন ছিল ৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তা করা হয়নি।
তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে রাজ্যের মতামত (ইটিভি ভারত) আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রীয় সরকার হাই-পাওয়ার কমিটি গঠন করেছিল ৷ সেখানে রাজ্যের তরফ থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার পর্যায়ের অফিসার ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে দুই-একটি ইনপুট নেওয়া হয়েছে । এই ইনপুট সবটাই টেকনিক্যাল বিষয়ে। রাজ্য সরকারের থেকে কোনও মতামত চাওয়া হয়নি। দু’দেশের মধ্যে এ-ধরনের চুক্তির সঙ্গে পলিসি ডিসিশন জড়িয়ে থাকে। একজন ইঞ্জিনিয়ার পর্যায়ের অফিসারের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে পলিসি ডিসিশনের জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে যে আলোচনার প্রয়োজন ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে করা হয়নি। তাই এটির বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
এদিকে তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিকবার চিঠি লিখে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যবাসীর অসুবিধার কথা তুলে ধরা হয়েছে । এ নিয়ে 24 জুন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে 2022 সালে 21 ফেব্রুয়ারি ও 17 নভেম্বর একই ইস্যুতে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 2017 সালের 25 মে বাংলার তরফে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এই চিঠিতে একাধিকবার বলা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জলবণ্টন অনেক পুরনো ইস্যু। এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জীবন এবং ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। আগামিদিনে কোটি কোটি মানুষ জল পাবে কি না, সেই বিষয়টি জড়িত জলবণ্টন ইস্যুতে ৷ এছাড়া নদী ভাঙনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আছে । এরপরেও রাজ্যকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে গঙ্গা ও তিস্তা, ওয়াটার ডিস্ট্রিবিউশন-সহ যতগুলি ইস্যু রয়েছে তার রিফ্লেকশন এই টেকনিক্যাল রিপোর্টে নেই। তিনি এও দাবি করেন, ভারত সরকারের জলশক্তি মন্ত্রক এই কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর, তা নিয়ে বাংলার সরকারের মতামত জানতে চেয়ে কোনও চিঠি দেননি । এমনকি রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও বিষয়ে আলোচনা হয়নি। কাজেই কেন্দ্র কোনওভাবেই বলতে পারে না, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বা রাজ্যের মতামত নেওয়া হয়েছে।