বোলপুর, 19 সেপ্টেম্বর: আরজি কর ও বিশ্বভারতীর আবাসিক ছাত্রীর মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়ে সাইবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা শিবির করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও বীরভূম জেলা পুলিশ । বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পড়ুয়াদের সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করা হয় ৷ আর্থিক প্রতারণা-সহ ভুয়ো অ্যাকাউন্ট, ওটিপি বিনিময়, ডার্ক ওয়ার্ল্ড থেকে কীভাবে দূরে থাকা যায়, সেই বিষয়েও সাবধান করেন পুলিশ আধিকারিকেরা ৷
বিশ্বভারতীতে সাইবার সচেতনতা শিবির (ইটিভি ভারত) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় মুখ পুড়েছে রাজ্যের পুলিশের । পুলিশের বিরুদ্ধে দিকে দিকে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন মানুষজন ৷ সেই জায়গায় ক্ষতে প্রলেপ দিতে আগেই বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিয়ে একটি আলোচনা সভা করেছিল বীরভূম পুলিশ । এর মধ্যেই দেখা গেল উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে বিশ্বভারতীতে পড়তে এসে মৃত্যু হয় আবাসিক ছাত্রী অনামিকা সিংয়ের ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে একটি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের ফাঁদে পড়েছিলেন ছাত্রীটি ৷
এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এদিন সাইবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা শিবির করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও বীরভূম জেলা পুলিশ । লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন, কর্মসচিব অশোক মাহাতো, ভাষাভবনের অধ্যক্ষ মনোরঞ্জন মিশ্র ৷ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) রানা মুখোপাধ্যায়, সার্কেল ইনস্পেকটর দীনেশ মণ্ডল, বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদার, শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ৷
বিশ্বভারতীতে প্রায় 15 হাজার ছাত্রছাত্রী আছেন ৷ পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে সাড়ে 6 কিলোমিটার ইন্টারনেট সংযোগের তার বিছিয়ে রয়েছে । রয়েছে ওয়াইফাই ইন্টারনেটের সুবিধা । এদিন পড়ুয়াদের সাইবার অপরাধ, অর্থাৎ, অনলাইনে প্রতারণা, ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা, অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে, পুরষ্কার পাওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা, ভুয়ো ছবি সংক্রান্ত প্রতারণা, মোবাইলে ভাইরাসের আক্রমণ সংক্রান্ত প্রতারণা, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন সংক্রান্ত প্রতারণা-সহ ডার্ক ওয়াল্ডের ফাঁদ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার বার্তা দেন পুলিশ আধিকারিকেরা । সাইবার ক্রাইমের উপর একটি অনলাইন প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতাও করা হয় ৷ পাশাপাশি কীভাবে নিজের মুঠোফোন সুরক্ষিত রাখা যায়, সেই সংক্রান্ত বিষয়েও সচেতন করা হয় ৷ ওটিপি, ইউপিআই পিন, এটিএম পিন বিনিময়ের ক্ষেত্রেও সচেতন করা হয় ।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন বলেন, "সাইবার অপরাধ বাড়ছে । এর শিকার হচ্ছেন অনেকেই ৷ আমাদের পড়ুয়াদের সচেতন করতে পুলিশ ও বিশ্বভারতী যুগ্মভাবে একটা সচেতন শিবির করল ৷ মূলত সুরক্ষিত কীভাবে থাকা যায়, তা নিয়েই আলোচনা হল ।"
অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, "বিশ্বভারতীর ছাত্রী মৃত্যুতে সাইবারের একটা বড় ভূমিকা ছিল ৷ আর যাতে কেউ এইভাবে ফাঁদে না পড়ে, আর কোনও প্রাণ যাতে না যায়, তার জন্য আমরা সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে একটা আলোচনা করলাম ৷ ওটিপি, পিন শেয়ারের ক্ষেত্রে, প্রলোভন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হল ৷ পরবর্তীতেও বিশ্বভারতীর সঙ্গে আমরা এই ধরনের সচেতনতা শিবির করতে চাই ।"