শিলিগুড়ি, 21 সেপ্টেম্বর: রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষার অবসান । অবশেষে নিরাপদে বাড়ি ফিরলেন রাশিয়ায় ভাড়াটে সৈন্য হয়ে আটকে পরা কালিম্পংয়ের বাসিন্দা উর্গেন তামাং । শনিবার সকালে তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন । বিমানবন্দরে উর্গেনকে স্বাগত জানায় কালিম্পং পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান রবি প্রধান-সহ গোটা পরিবার । বিমানবন্দরে স্ত্রী অম্বিকা ও দুই সন্তানকে দেখে উচ্ছ্বসিত উর্গেন তামাং ৷ তাঁর চোখে জলও দেখা দেয় ৷
তাঁর স্ত্রী অম্বিকা বলেন, "ভাষায় বলে বোঝাতে পারবো না যে আমরা কত উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছিলাম । দুই শিশুকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলাম । তবে এই দুর্দিনে আমাদের পাশে রবি প্রধান, প্রধানমন্ত্রী পাশে ছিলেন ৷ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই ।"
উৎকন্ঠার অবসান, নিরাপদে বাড়ি ফিরলেন রাশিয়ায় ‘ভাড়াটে সৈন্য’ উর্গেন তামাং (ইটিভি ভারত) উর্গেন তামাং বলেন, "আমি একজন সাধারণ মানুষ । টাকা উপার্জনে গিয়ে এই বিপদে পড়ব জানতাম না । আমরা চারজন বেঁচে ছিলাম । আমাকে সেখান থেকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করেছিল । কিন্তু আমি দুর্ভাগ্যবশত পালাতে পারিনি । কিন্তু আমাদের সরকার খুব মজবুত থাকায় আমাকে তারা ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছেন । আমাকে সবাই সাহায্য করায় সবাইকে ধন্যবাদ জানাই ।"
রবি প্রধান বলেন, "আমি প্রথম থেকেই উর্গেনের বিষয়টা জানতাম । সেইমতো আমি চেষ্টা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলাম তাঁকে ভিন দেশ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসার । সেই মতো বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল । খুব ভালো লাগছে আজকে উর্গেন বাড়ি ফিরেছে ।"
দুই সন্তান ও স্ত্রীর সঙ্গে উর্গেন তামাং (নিজস্ব চিত্র) প্রসঙ্গত, উর্গেন কালিম্পং পুরসভার 19 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৷ সেনাবাহিনী থেকে তিনি অবসরের পর গুজরাতে কর্মরত ছিলেন ৷ সেখান থেকেই দিল্লির এজেন্টের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় ৷ তারপর তিনি বাড়ি আসেন ও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন ৷ এর জন্য এজেন্টকে ছ’লাখ টাকাও দিয়েছিলেন তিনি ৷ গত 18 জানুয়ারি রাশিয়ায় যান উর্গেন । সেখানে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও, তাঁকে কিছু নথিপত্রে সই করিয়ে প্রথমে মস্কোতে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখান থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে নামানো হয় তাঁকে । গত 26 মার্চ ভিডিয়ো বার্তায় নিজের আটকে পড়ার কথা জানান উর্গেন ৷ তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তিনি । তারপরেই পদক্ষেপ করে কেন্দ্র সরকার ।
বাগডোগরা বিমানবন্দরে উর্গেন তামাং (নিজস্ব চিত্র)