কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: কলকাতায় শুরু হয়ে গেল ই-ওয়েস্ট সংগ্রহ কেন্দ্র ৷ কলকাতা পুরনিগম, রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি দফতর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে ৷ বাড়িতে পড়ে থাকা ভাঙা টিভি, মোবাইল, প্রিন্টার, রেডিও-র মতো নানা ইলেকট্রনিক বর্জ্য দিলে, তার বিনিময় টাকা পাওয়া যাবে ৷ মূলত, ই-বর্জ্য দূষণ ঠেকাতে চালু হল এই পরিষেবা ৷ শুধু তাই নয়, এর প্রক্রিয়াকরণ হবে ৷ শনিবার এই পরিষেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তা রাজেশ কুমার-সহ অন্যান্য ৷
কলকাতা পুরনিগমের সূত্রে জানা গেছে, দু’টি করে বরো অফিসে 7 দিন করে শিবির হবে ৷ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খোলা থাকবে এই কালেকশন সেন্টারগুলি ৷ সেখানেই নাগরিকরা ই-ওয়েস্ট জমা করতে পারবেন ৷ ওয়েবল সংস্থা এই ই-বর্জ্য সংগ্রহ করছে ৷ তাদের বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্য বা কত ইনসেনটিভ পাবেন, তা জানা যাবে ৷ পাশাপশি, একটি বিল জেনারেট হবে ৷ সেই পরিমাণ অর্থ ইউপিআই মারফত চলে যাবে, ই-বর্জ্য বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে ৷
চলতি মাসে 17 সেপ্টেম্বর 1 ও 9 নম্বর বরোতে এই কালেকশন সেন্টার হবে ৷ এই সেন্টার করা ও প্রক্রিয়াকরণে চাকরি পাবেন এক হাজার জনের বেশি ৷ এদিন অনুষ্ঠানে পর্ষদ কর্তা রাজেশ কুমার বলেন, "গোটা বিষয়টি করতে প্রাথমিকভাবে ওয়েবলকে 10 কোটি টাকা প্রসেস ফেসিলিটির জন্য দেওয়া হয়েছে ৷ সরকারি দফতরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট যেমন কোম্পানি করা হচ্ছে, তেমন বেসরকারি ক্ষেত্রেও হচ্ছে ৷ যারা এই বর্জ্যগুলি নিয়ে প্রক্রিয়াকরণ করে পুনর্ব্যবহার যোগ্য করে তুলবেন ৷"
তিনি বলেন, "দেড় লাখ মেট্রিক টন বছরে ই-ওয়েস্ট হয় ৷ সেখানে মাত্র 50 হাজার মেট্রিক টন প্রক্রিয়াকরণ করা হয় ৷ ইলেক্ট্রনিক জিনিস যারা তৈরি করছে, সেই কোম্পানি ই-ওয়েস্ট প্রসেস করবে ৷ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র কথায়, ‘‘ই-ওয়েস্ট গুরুত্ব বাড়ছে ৷ মানব স্বাস্থ্যে খুব বাজে প্রভাব পড়ে। বিগত আড়াই বছর ধরে চলছে এই কাজ। উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ বিরাট গ্যাপ আছে আমাদের রাজ্যে ৷ কলকাতায় 16টি বরোতেই হবে এটি ৷ 3-6 মাসে আরও বেশি কেন্দ্র তৈরি হবে ৷ ওয়ার্ড লেবেলে চালু হবে ৷"
মেয়র ফিরহাদ জানিয়েছেন, "সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আমলে ওয়েস্ট টু ওয়েলথ প্রোগ্রাম করেছিলাম ৷ এখন কলকাতা পুরনিগম সংগঠিতভাবে করছে ৷ 2000 সালের ভাবনার বাস্তবায়ন হচ্ছে ৷ কংক্রিট ওয়েস্ট কাজে লাগে ৷ ই-ওয়েস্ট এতদিন শুনেছি ৷ ওয়েবলকে ধন্যবাদ, তারা এই গোটা বিষয়টি করবে ৷ কলকাতায় রোজ 33 মেট্রিকটন এমন বর্জ্য তৈরি হয় ৷ কলকাতার সঙ্গে সল্টলেক, রাজারহাট জুড়ে দিলে পরিমাণ অনেক বেশি হবে ৷ ই-ওয়েস্ট রেখে দিলে সমস্যা হয় ৷ মাটি, জল, বায়ু দূষণ হয় ৷ গ্রিন হাউজ গ্যাস বা ক্যানসার হতে পারে ৷ স্নায়ু সমস্যা হতে পারে, চর্ম রোগ ৷ এসব করলে নিজেদের পরের প্রজন্মকে পরোক্ষভাবে মেরে ফেলছি ৷ পুর প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই ৷"