তৃণমূল নেতার বাড়িতে মদের কারখানা (ইটিভি ভারত) জলপাইগুড়ি, 25 মে:ফিনাইল কারখানার আড়ালে ভেজাল মদ তৈরি করতেন রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েতের চ্যাংমারি এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিরঞ্জন রায়। মদ তৈরির স্পিরিটের গন্ধ বের হলে প্রতিবাশীদের বলা হত ফিনাইল কারখানার কাজ চলছে ৷ জলপাইগুড়ি জেলা আবগারি সুপার সত্যজিৎ চৌধুরী জানান, অভিযানে মদের বোতল-সহ ফেক লেবেল, পাঞ্চিং মেশিন, বোতলের ছিপি-সহ বিভিন্ন উপাদান উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে, প্রচুর ফিনাইলের কার্টুনও ৷ তিনি বলেন, "সামনে ফিনাইল রেখে মদ তৈরির কারবার চলত এই কারখানায় । আমরা গতকাল প্রচুর ফিনাইল পেয়েছি । ট্রাকে করে ফিনাইলের আড়ালে মদ পাচার করা হত রাজ্যের একাধিক জেলায় । পাচার করা হত বিহারেও ৷ আশেপাশে গ্রামবাসীরা সবাই জানত ফিনাইলের কারখানা ফলে কেউ কিছু বলত না। ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা না হওয়ার কারণে এলাকায় লোকজনও বেশি যেতেন না ৷ ফলে অবৈধ মদ তৈরির কাজ করতে সুবিধা হত ।
এখন প্রশ্ন উঠছে, রামশাইয়ের মত প্রত্যন্ত এলাকায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অবৈধ মদের কারখানা কার মদতে তৈরি হয়েছিল? এতদিন ধরে এই অবৈধ মদ তৈরির কারখানা রমরমিয়ে চলছিল অথচ কেউ কিছু জানতে পারলেন না কেন? ইতিমধ্যেই অবৈধ এই মদ পাচারের বিষয়ে আবগারি দফতরের আধিকারিকরা বেশ কিছু নথি পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ সম্প্রতি জলপাইগুড়ির একাধিক এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ মদ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ এবং আবগারি দফতর ৷ জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অধিকাংশ মদই নাকি এই কারখানায় তৈরি হয়েছে ৷
আরও পড়ুন:তৃণমূল নেতার বাড়িতে মদের কারখানা, স্পিরিট-সহ 5 কোটির সামগ্রী উদ্ধার
উল্লেখ্য, গোপন সূত্র পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েতের চ্যাংমারি এলাকার বাসিন্দা তথা স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা নিরঞ্জন রায়ের বাড়িতে অভিযান চালায় আবগারি দফতর ৷ জলপাইগুড়ি জেলা আবগারি দফতরের কর্তা সত্যজিৎ চৌধুরী ও ময়নাগুড়ি আবগারি দফতরের ওসি প্রবীর সান্যালের নেতৃত্বে চলে এই অভিযান ৷ 7-8 ঘণ্টা অভিযান চালিয় 5 কোটি 20 লক্ষ টাকার স্পিরিট-সহ মদ তৈরির সামগ্রী উদ্ধার করা হয় । সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরবঙ্গে এত বড় সাফল্য পাওয়া যায়নি বলে দাবি রাজ্য আবগারি দফতরের । রাজ্যে নির্বাচনের আবহে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য় ছড়ায় এলাকায় ৷ স্থানীয় বাসিন্দা নরেশচন্দ্র রায় জানান, আমাদের ফিনাইল তৈরি হচ্ছে বলেই বলা হত ৷ কিন্তু ফিনাইলের আড়ালে যে মদ তৈরি হত, তা জানতামই না ৷
আরও পড়ুন:নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা পূর্ব মেদিনীপুর-সহ দুই জেলায়, 'রেমাল' এখন কোথায়?
উত্তরবঙ্গের অ্যাডিশনাল এক্সাইজ কমিশনার সুজিত দাস জানান,এই ধরনের মদের বিক্রি, খাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের যেমন রাজস্ব যেমন ক্ষতি হয়। তেমনি এই মদ কেউ খেলে তার শারীরিক বড় সমস্যা থেকে যায়।বিষক্রিয়া পর্যন্ত হতে পারে বলে জানান সুজিত দাস। কয়েক মাস ধরেই এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল নিরঞ্জন রায়।ধরার জন্য আদালতের কাছ থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে তাকে ধরব। এখান থেকে তৈরী মদ দার্জিলিং, কালিম্পং, সহ বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয় বিহার রাজ্যেও পাচার করা হত বলে আমরা জানতে পেরেছি।ময়নাগুড়িতে নিরঞ্জন রায়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে 5 কোটি 20 লক্ষ টাকার মদ তৈরীরর সামগ্রী উদ্ধার করেছে।যা সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে বড় অভিযান।আমরা মদের বোতল সহ ফেক লেবেল।পাঞ্চিং মেশিন। বোতলের ছিপি।সহ বিভিন্ন উপাদান উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন:মডেল বুথে থিম যামিনী রায়, বাঁকুড়ার ভোটকেন্দ্র সাজল জেলার কৃতী সন্তানের শিল্পকর্মে