বাংলাদেশ, 9 অগস্ট: 80 বছর বয়সে পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজের বাড়িতেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বুদ্ধবাবুর প্রয়াণে সমাজের সমস্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোকপ্রকাশ করেছেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রত্য়েকেই বর্ষীয়ান এই সিপিএম নেতার সততার কথা বলেছেন। তবে, তাঁর প্রয়াণে একগুচ্ছ অভিযোগ তুললেন তসলিমা নাসরিন। বললেন, তিনি বুদ্ধদেবের থেকে খাঁটি বামপন্থী ৷
সোশাল মিডিয়ায় তসলিমা লিখলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মারা গিয়েছেন। খবরটি একজন দিল সকালে। শেষদিকে তাঁর কষ্টের মাত্রা খুব বেশি ছিল। 2003 সালের আগে এরকম খবর শুনলে আমি হয়তো চোখের জল ফেলতাম। কিন্তু তিনি আমার চোখের জল অনেক বছর ঝরিয়েছেন, তিনি বেঁচে থাকাকালীন। তাই চোখ থেকে আজ কোনও জল ঝরল না তাঁর জন্য। আসলে কোনও জল আর অবশিষ্ট নেই।"
পরে লিখেছেন, "2002 পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সখ্য ছিল। তারপর তাঁর কী হল কে জানে, 2003 সালে বলা নেই, কওয়া নেই আমার দ্বিখণ্ডিত বইটি তিনি নিষিদ্ধ করলেন। সেদিনই মনে হয়েছিল আমি তাঁর চেয়ে খাঁটি বামপন্থী। আমি নাস্তিক, আমি নারীবাদী, আমি ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের সমতা এবং সমানাধিকারে বিশ্বাস করি। একটি মৌলবাদী দেশে কিশোর বয়স থেকে আমার আদর্শের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছি। আমার দ্বিখণ্ডিত বইটিতে আমি রাষ্ট্রের কোনওরকম ধর্ম থাকার বিরুদ্ধে লিখেছিলাম।"
তিনি আরও লেখেন, "রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে পৃথক করার জন্য লিখেছিলাম বলে তিনি আমার বই নিষিদ্ধ করেছিলেন। ভাবা যায়, একজন বড় বামপন্থী নেতা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকা সমর্থন করতে চান। যুক্তি দেন, তা না-হলে মুসলমানরা রাগ করবে। হাইকোর্টে কলকাতার মানবাধিকার সংস্থা এপিডিআর দ্বিখণ্ডিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা করল। জয়ী হল। দ্বিখণ্ডিত থেকে বুদ্ধবাবুর জারি করা নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল। তিনি আমার ওপর আগুন হয়ে রইলেন রেগে। আরে মামলা তো আমি করিনি, জয়ী তো আমি হইনি, সুজাতবাবুরা হয়েছে ৷"