কলকাতা, 3 জানুয়ারি: শহরের 8টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয় ৷ এই সম্পত্তিগুলি থেকে বিদুৎ ও পানীয় জলের পরিষেবা অবিলম্বে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এছাড়াও ওই সম্পত্তিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের উচ্ছেদেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতের এই নির্দেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুরনিগম, কলকাতা পুলিশ ও সিইএসসি। নির্দেশ কতদূর বাস্তবায়িত করা হয়েছে, তার রিপোর্ট আগামী 28 ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে জমা করতে হবে। কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এনিমি প্রপার্টি (শত্রু সম্পত্তি যা 1968 সালের আগের পাকিস্তানের নাগরিকদের সম্পত্তি) অন্যান্য সম্পত্তিতে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় আবেদনকারীদের দাবি কলকাতা পুরনিগমের অনুমোদন ছাড়াই বেআইনি নির্মাণ সংগঠিত হচ্ছে।
ওই আবেদনে কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের 6টি সম্পত্তি, রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটের একটি সম্পত্তি, গিরিশ বিদ্যারত্ন লেনের একটি সম্পত্তির উল্লেখ করা হয় ৷ পূর্বেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল কলকাতা পুরনিগম ও পুলিশ যৌথভাবে একটি টাস্কফোর্স গঠন করবে। ওই টাস্কফোর্সে কলকাতা শহরে কতগুলি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখবে ৷ বসবাসকারী বাসিন্দাদের একটি রূপরেখা তৈরি করবে। তাছাড়া বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে।
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে 170 নম্বর কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের এক বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গত 17 সেপ্টেম্বর 2024 সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র 170 নম্বরের সম্পত্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলেও বাকিগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলার শুক্রবার শুনানি চলাকালীন কলকাতা পুরনিগমের আইনজীবী জানান, বেআইনি নির্মাণ থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে গেলে পুলিশি সহায়তার প্রয়োজন।
এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ-
- কলকাতার বেআইনি নির্মাণগুলিতে অবিলম্বে পুরনিগম পানীয় জলের পরিষেবা ও সিইএসসি-র বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করতে হবে।
- অবিলম্বে ওই বেআইনি বাড়ি/সম্পত্তিতে বাসবাসকারীদের কলকাতা পুরনিগম উচ্ছেদ করবে। পুলিশ তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
- উচ্ছেদের পর ওই সম্পত্তি/বেআইনি নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে হবে।
- আদালতের এই নির্দেশ উপযুক্ত ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, কলকাতা পুরনিগম পুলিশ এবং সিইএসসি নজরদারি চালাবে।
- আদালতের এই নির্দশের বাস্তবায়নে কার্যকারিতা 28 ফেব্রুয়ারি আদালতকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হনে।
- 170 নম্বর কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের সম্পত্তি ভাঙা হবে কি না, সেই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উপর নির্ভর করবে।