দার্জিলিং, 7 ফেব্রুয়ারি: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে থ্রেট কালচার ও র্যাগিংয়ের অভিযোগ করলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী । ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পরে গিয়েছে গোটা চিকিৎসক মহলে ।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন (পিএমআর) বিভাগের ডিপ্লোমা ইন ফিজিওথেরাপির প্রথম বর্ষের ছাত্রী । তাঁকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগেরই দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুঞ্জয় দেবশর্মার বিরুদ্ধে । অভিযোগ পেতেই দ্রুত পদক্ষেপ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ।
অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির নির্দেশে পুলিশের দ্বারস্থ ছাত্রী (নিজস্ব চিত্র) বৃহস্পতিবারই বৈঠকে বসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি । বৈঠকে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত হয় । এরপর এদিন রাতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী । অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, "অভিযোগ পাওয়া মাত্র পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে বলা হয়েছে বৈঠক ডেকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে ।"
মূলত ঘটনার সূত্রপাত কলেজের পিকনিকে যাওয়া নিয়ে । বিভাগ থেকে পিকনিকে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় । কিন্তু সেই পিকনিকে যেতে মানা করে দেন ওই ছাত্রী । এরপর থেকেই নানাভাবে অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছাত্রীটিকে হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ । ফোন করে, হোয়াটসঅ্যাপে, আবার কোনও সময় সামনে পেলে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ । অভিযোগ, এরপর সম্প্রতি বিভাগে কাজ করার সময় ওই ছাত্রীকে ফের হুমকি দেন পড়ুয়া ৷ ঘটনার পরই আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন ওই ছাত্রী । তিনি এরপর বিভাগীয় প্রধান ও কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান । অভিযোগ পেতেই অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা ।
বৃহস্পতিবার অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি বৈঠকে বসে । কমিটির সদস্যরা অভিযোগকারী ছাত্রীকে ডেকে সমস্ত ঘটনা শোনেন । কিন্তু অভিযুক্ত পড়ুয়াকে ডাকা হলেও তিনি ছুটিতে থাকায় কমিটির বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন । ছাত্রীর মুখে সমস্ত ঘটনা শুনে কমিটির সদস্যরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে সম্মতি দেন । সেই মতো ছাত্রীটি পুলিশে শ্লীলতাহানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন ।
এই বিষয়ে হাসপাতালের প্রাক্তন হাউজ স্টাফ চিকিৎসক শাহরিয়ার আলম বলেন, "যা ঘটেছে তা নিন্দনীয় । তবে আন্দোলনের পরই এখন পড়ুয়াদের মধ্যে এই ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস এসেছে । আগে এসব চাপা পড়ে যেত । আর এখন কর্তৃপক্ষও দ্রুত পদক্ষেপ করছে ।"