সন্দেশখালি, 24 ফেব্রুয়ারি: দাদা শাহজাহান সন্দেশখালির 'বাঘ' হলে ভাই সিরাজউদ্দিন ছিলেন বেড়মজুর অঞ্চলের 'ত্রাস'! জোর করে জমি দখল, লুঠপাট, সন্ত্রাস, কৃষি জমি কব্জা করে ইচ্ছামতো ভেড়ি বানানো, নিজের নামে মার্কেট- সবেতেই 'বাদশা' দাদার পথের পথীক ছিলেন ভাই সিরাজউদ্দিনও। তাঁর বেপরোয়া দাপটে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকত গোটা বেড়মজুর অঞ্চল। প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, প্রাণের ভয়েকে সঙ্গী করেই কোনও রকমে জীবনযাপন করতে হত এই অঞ্চলের কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে। সন্দেশখালি কাণ্ডে জনরোষের জেরে সেই ক্ষমতাবান সিরাজউদ্দিনকেই এখন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে।
একসময় সন্দেশখালির বেড়মজুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি পদে ছিলেন শেখ সিরাজউদ্দিন। এখন তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় আপাতত অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি, এমনটাই খবর সূত্রের। প্রথমে গ্রামেই চেম্বার খুলে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন দাপুটে শাসক নেতা সিরাজউদ্দিন। পরবর্তীকালে এলাকার 'দাদা' হয়ে ওঠেন । নিজেই গড়ে ফেলেন মস্তান বাহিনী। এদের কাজই ছিল গ্রামে ঘুরে ঘুরে রেয়াতি জমি গায়ের জোরে দখল করে তা সিরাজ 'ভাই'-এর হাতে তুলে দেওয়া। শুধু কি তাই ! অভিযোগ, আবাস এবং জব কার্ডের টাকাও হাতিয়ে নিত সিরাজের দলবল।
এভাবেই দিনের পর দিন গ্রামের গরিব মানুষকে শোষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের ৷ সূত্রের খবর, বেড়মজুর 1 ও 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে যেদিকেই চোখ যাবে সেদিকেই সিরাজউদ্দিন 'ভাই'-এর দখলদারির স্পষ্ট চিহ্ন মিলবে ৷ অভিযোগ, বিঘার পর বিঘা জমি দখল করে সেই জমির চারিত্রিক বদল ঘটিয়ে নিজের ভেড়ি ব্যবসার বহর বাড়িয়েছেন সিরাজউদ্দিন ।
এমনকী তাঁর নজর থেকে বাদ পড়েনি সরকারি ক্যানেলও। সেগুলিও কব্জা করে সিরাজউদ্দিন তাঁর কাজে লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ শাহজাহানের মতো সিরাজ 'ভাই'-এর সেই কু-কীর্তির বিরুদ্ধেই গ্রামবাসীরা আজ পথে নেমে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। এখন তাঁরা চাইছেন অত্যাচারী শাহজাহান এবং তাঁর দোসর শেখ সিরাজউদ্দিনের কড়া শাস্তি হোক। এই দাবিতেই গত তিনদিন ধরে জ্বলছে গোটা বেড়মজুর। সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে।