ETV Bharat / state

এক দশকের দাবি পূরণের পথে, সেবকে দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণে হাজার কোটির প্রকল্প - CORONATION BRIDGE

পূরণ হতে চলেছে উত্তরবঙ্গবাসীর এক দশকের দাবি ৷ সেবকে দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণে এক হাজার কোটিরও বেশি প্রকল্পে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক৷

ETV BHARAT
সেবকে দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণে হাজার কোটির প্রকল্প (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 7, 2025, 5:13 PM IST

শিলিগুড়ি, 7 ফেব্রুয়ারি: খুব দ্রুত পূরণ হতে চলেছে সমগ্র পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের অন্যতম দাবি । যে দাবি পূরণ হলে উত্তরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নয়া দিক খুলে যাবে । দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর টানাপোড়েনের পর এবার সেই দাবি পূরণে এক হাজার কোটিরও বেশি অঙ্কের প্রকল্প বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সরকার । সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জোয়ার আসবে পর্যটন থেকে সীমান্তের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ।

উত্তরবঙ্গবাসীদের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দাবি ছিল, সেবকের তিস্তা নদীর উপর থাকা ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আমলের করোনেশন সেতুর পাশে বিকল্প অত্যাধুনিক আরেকটি সেতু নির্মাণের । সেই দাবি পূরণের লক্ষ্যে এবার 1190.40 কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক । সেতুর পাশাপাশি সেতুর সঙ্গে সেবক, দার্জিলিং ও এলেনবাড়ি যোগাযোগের প্রায় সাত কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও হবে । এই প্রকল্পের কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে । প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা ।

ETV BHARAT
সেবকে দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণে হাজার কোটির প্রকল্প (নিজস্ব চিত্র)

এবিষয়ে রাজু বিস্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইটিভি ভারতকে জানান, "2019-এর লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই আমার লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় একটি করোনেশন সেতু তৈরি করার । পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের সার্বিক উন্নয়নই আমার লক্ষ্য । আমি সংসদেও একাধিকবার এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম । সেই সময় মন্ত্রী নীতিন গড়করি আমাকে জানিয়েছিলেন, করোনেশন সেতুর বিকল্প নির্মাণের ডিপিআর হয়ে গিয়েছে । আগামী তিন বছরের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে । সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই । এই সেতুটি হলে পাহাড় ও সিকিমে ব্যাপক উন্নয়ন হবে ।"

এই বিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "এটা দারুণ খবর । এই বিকল্প সেতু হলে যানজটের চিন্তা থাকবে না । ঘুরপথেও আর পর্যটকদের কালিম্পং বা সিকিম যেতে হবে না । এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল । পূরণ হলে উত্তরের উন্নয়নে ব্যাপক জোয়ার আসবে ।"

প্রসঙ্গত, 1937 সালে ব্রিটিশরা এই করোনেশন সেতুটি নির্মাণ করেছিল । 2011 ও 2015 সালের ভূমিকম্প, তারপর হড়পা বানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এরপর 2020 সালে সেতুটি রাজ্যের পূর্ত দফতরের তরফে মেরামত ও সংস্কার করা হয় । কিন্তু পরবর্তীতে সেতুটির পরিস্থিতি যাচাই করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেতুটি দিয়ে 10 টনের উপর ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে । তাছাড়াও মাঝেমধ্যেই ওই সেতুতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় । যে কারণে লাভা, পেশক হয়ে প্রায় 14 কিলোমিটার ঘুরে কালিম্পং ও সিকিম যেতে হয় । এই সেতুটি হলে সেই ঘোরাপথ অনেকটাই কমবে ।

অন্যদিকে, ভারত-চিন সীমান্তের কথা মাথায় রেখে পাহাড় ও সিকিম পর্যন্ত যোগাযোগে ব্যাপক জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । প্রায় চার হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পে, একইভাবে চিন সীমান্ত পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র । ইতিমধ্যে সেবক-রংপো রেলপথের কাজ প্রায় শেষের দিকে । এবার সড়ক পথে রংপো পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করার উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক ।

সেবক থেকে কালিম্পং হয়ে সিকিমের রংপো হয়ে রানিপুল পর্যন্ত যাবে সেতুটি । 120 কিলোমিটারের সেই 10 নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য প্রায় 1800 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । জাতীয় সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে একদিকে যেমন জাতীয় নিরাপত্তার অনেকটাই সুবিধা হবে, পাশাপাশি সিকিম এবং এরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পেও ব্যাপক জোয়ার আসবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

শিলিগুড়ি, 7 ফেব্রুয়ারি: খুব দ্রুত পূরণ হতে চলেছে সমগ্র পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের অন্যতম দাবি । যে দাবি পূরণ হলে উত্তরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নয়া দিক খুলে যাবে । দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর টানাপোড়েনের পর এবার সেই দাবি পূরণে এক হাজার কোটিরও বেশি অঙ্কের প্রকল্প বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সরকার । সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জোয়ার আসবে পর্যটন থেকে সীমান্তের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ।

উত্তরবঙ্গবাসীদের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দাবি ছিল, সেবকের তিস্তা নদীর উপর থাকা ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আমলের করোনেশন সেতুর পাশে বিকল্প অত্যাধুনিক আরেকটি সেতু নির্মাণের । সেই দাবি পূরণের লক্ষ্যে এবার 1190.40 কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক । সেতুর পাশাপাশি সেতুর সঙ্গে সেবক, দার্জিলিং ও এলেনবাড়ি যোগাযোগের প্রায় সাত কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও হবে । এই প্রকল্পের কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে । প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা ।

ETV BHARAT
সেবকে দ্বিতীয় করোনেশন সেতু নির্মাণে হাজার কোটির প্রকল্প (নিজস্ব চিত্র)

এবিষয়ে রাজু বিস্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইটিভি ভারতকে জানান, "2019-এর লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই আমার লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় একটি করোনেশন সেতু তৈরি করার । পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের সার্বিক উন্নয়নই আমার লক্ষ্য । আমি সংসদেও একাধিকবার এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম । সেই সময় মন্ত্রী নীতিন গড়করি আমাকে জানিয়েছিলেন, করোনেশন সেতুর বিকল্প নির্মাণের ডিপিআর হয়ে গিয়েছে । আগামী তিন বছরের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে । সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই । এই সেতুটি হলে পাহাড় ও সিকিমে ব্যাপক উন্নয়ন হবে ।"

এই বিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "এটা দারুণ খবর । এই বিকল্প সেতু হলে যানজটের চিন্তা থাকবে না । ঘুরপথেও আর পর্যটকদের কালিম্পং বা সিকিম যেতে হবে না । এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল । পূরণ হলে উত্তরের উন্নয়নে ব্যাপক জোয়ার আসবে ।"

প্রসঙ্গত, 1937 সালে ব্রিটিশরা এই করোনেশন সেতুটি নির্মাণ করেছিল । 2011 ও 2015 সালের ভূমিকম্প, তারপর হড়পা বানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এরপর 2020 সালে সেতুটি রাজ্যের পূর্ত দফতরের তরফে মেরামত ও সংস্কার করা হয় । কিন্তু পরবর্তীতে সেতুটির পরিস্থিতি যাচাই করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেতুটি দিয়ে 10 টনের উপর ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে । তাছাড়াও মাঝেমধ্যেই ওই সেতুতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় । যে কারণে লাভা, পেশক হয়ে প্রায় 14 কিলোমিটার ঘুরে কালিম্পং ও সিকিম যেতে হয় । এই সেতুটি হলে সেই ঘোরাপথ অনেকটাই কমবে ।

অন্যদিকে, ভারত-চিন সীমান্তের কথা মাথায় রেখে পাহাড় ও সিকিম পর্যন্ত যোগাযোগে ব্যাপক জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । প্রায় চার হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পে, একইভাবে চিন সীমান্ত পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র । ইতিমধ্যে সেবক-রংপো রেলপথের কাজ প্রায় শেষের দিকে । এবার সড়ক পথে রংপো পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করার উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক ।

সেবক থেকে কালিম্পং হয়ে সিকিমের রংপো হয়ে রানিপুল পর্যন্ত যাবে সেতুটি । 120 কিলোমিটারের সেই 10 নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য প্রায় 1800 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । জাতীয় সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে একদিকে যেমন জাতীয় নিরাপত্তার অনেকটাই সুবিধা হবে, পাশাপাশি সিকিম এবং এরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পেও ব্যাপক জোয়ার আসবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.