কলকাতা, 21 অক্টোবর: উৎসব বনাম আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ, এই লড়াইয়ে কেটেছে এ বছরের পুজো । তবে এবার যাই হোক না কেন, বিজয়া মিটতে না-মিটতেই, কলকাতার বহু পুজো কমিটি সেরে ফেলল আগামী বছরের প্রস্তুতি । এখনই বিষয় ভাবনা প্রকাশ না করলেও, অনেক কমিটির সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে গিয়েছে থিম শিল্পীদের ।
এ বছর ঢাকের শব্দ বিলীন হয়েছে প্রতিবাদের গর্জনে । তবে পুজো উদ্যোক্তারাও দমে থাকার নন । তাঁরাও বিজয়ার মিষ্টি মুখ সেরেই আগামী বছরের উৎসবের পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন ৷ কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, বিভিন্ন পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে আগামী বছরের থিম ও শিল্পীদের ।
চোরবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি (নিজস্ব ছবি) অর্থাৎ এবারের ঢাকের শব্দ বিলীন হতেই আগামী বছরের ঢাকে কাঠি পড়ার প্রস্তুতি শুরু । ইতিমধ্যে উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা সর্বজনীন পুজো কমিটির তরফে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে, পরের বারেও অনির্বাণ । কাশী বোস লেন পোস্ট করেছে, 25-এর আহ্বান সঙ্গে অনির্বাণ । চোরবাগান সোশাল মিডিয়ায় লিখেছে, 90-এর উদযাপনে এবার এক অন্য মৃধা । 25 পল্লি পোস্ট করেছে, 25-এর পুজো হোক উৎসবময়, সঙ্গে মলয় শুভময় ।
আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব (নিজস্ব ছবি) কেন্দুয়া শান্তি সংঘে আগামী বছর থিম করছেন সুশান্ত পাল । এমনই আরও অনেক পুজো কমিটি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তাদের শিল্পীর নাম । এছাড়াও একাধিক পুজো কমিটি বিভিন্ন শিল্পীদের সঙ্গে চুক্তির জন্য আলোচনা চালাচ্ছে ৷
দমদম পার্ক তরুণ সংঘ (নিজস্ব ছবি) এই প্রসঙ্গে কাশী বোস লেন দুর্গাপুজা কমিটির কর্মকর্তা সৌমেন দত্ত বলেন, "কলকাতার দুর্গাপুজো এখন যে মাত্রায় উঠেছে সেখানে আমাদের এক বছর আগে থাকতে প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হয় । নবমীর পরেই আমরা ক্লাবের সদস্যরা আলোচনায় বসে যাই । আলোচনা করে দিন 4-5 এর মধ্যে শিল্পীর সঙ্গেও বসে চুক্তি করে ফেলি । এ বছর পুজোয় প্রতিবাদ হলেও মানুষ উৎসবে গা ভাসিয়েছে । আগামী বছরে উৎসবময় হবে গোটা পুজো ।"
কেন্দুয়া শান্তি সংঘ (নিজস্ব ছবি) শিল্পী অনির্বাণের কথায়, "এই বছর কলকাতার 6টি পুজোয় কাজ করেছি । আগামী বছরও 6টা পুজোয় কাজ করতে চলেছি । একটা পুজো শেষের পর বিজয়া থেকেই বিভিন্ন ক্লাব কর্তারা আসতে শুরু করেন । তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট ও জায়গা দেখে চুক্তি করি । এইবার চারটি পুজোর থিম ছিল, আগামী বছরও ওগুলি করব । দুটো পুজো ছাড়ছি, পরিবর্তে নতুন দুটো পুজোর থিম করছি । আর অফার এলেও সেগুলোর কাজ ধরতে পারছি না ।"
অর্থাৎ শিল্পীদের ও পুজো উদ্যোক্তাদের কথাতেই স্পষ্ট যে, দুর্গাপুজোর উদ্যম ও আগামীর উৎসবের প্রস্তুতি মায়ের বিসর্জন পর্ব থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ।