কলকাতা, 3 অক্টোবর: 10 দফা দাবিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দু'বার ইমেল করার পরও মেলেনি উত্তর ৷ তাই ফের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । এর আগে টানা 42 দিন ধরে তাঁদের কর্মবিরতি চলেছিল । সেই সময় তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন বহু সিনিয়র চিকিৎসক । তবে নতুন করে এই পূর্ণ কর্মবিরতিতে কতটা সমর্থন রয়েছে সিনিয়র চিকিৎসকদের ?
এই নিয়ে ইটিভি ভারত কথা বলেছে শহরের বেশ কিছু স্বনামধন্য সিনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে ৷ সেখানে চিকিৎসদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন মত । তবে সর্বোপরি সবার মুখে একটাই কথা, রোগীর স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না-হয়, সেই দিকটাও নজরে রাখা উচিত জুনিয়র ডাক্তারদের ।
কর্মবিরতি নিয়ে ভিন্নমত সিনিয়র চিকিৎসকদের (নিজস্ব ভিডিয়ো) চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "চিকিৎসকরা বারবার নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন । সেই থেকেই তাঁদের এই কর্মবিরতি । জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর ভরসা আছে । তাঁরা এমন কিছু করবেন না, যাতে সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা তৈরি হয় । আমরা তাঁদের পাশে আছি সবসময় । বিকল্প অনেক কিছু হতে পারে, যেমন অবস্থান বা অনশন ধর্মঘট । কিন্তু কী করা হবে, সেটা ওঁরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন ।"
অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না বলেই জানান চিকিৎসক তমনাশ চৌধুরী । কিন্তু সাধারণ মানুষ জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে । তাই তাঁদের দিকও বিবেচনা করার কথা শোনা গেল তাঁর মুখে । তিনি বলেন, "সরকার অসংবেদনশীল, দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিচ্ছে ৷ তবে আমাদের সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে । আমরা 53 দিন ধরে কাজ করছি । চিকিৎসকদের মধ্যে একটা বার্ন আউটের পরিস্থিতি হচ্ছে । তাই সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে ।"
একই সুর শোনা গেল চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্রের গলায় । তিনি বলেন, "যে জনগণ জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন, সেই সাধারণ জনগণ সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল ৷ তাঁদের কথাও ভাবা দরকার ৷ আমরা চাই দ্রুত ন্যয়বিচার ৷ অচলাবস্থা দূর হওয়া দরকার ৷ বিভিন্নভাবে আন্দোলনকে চালিয়ে যেতে হবে ৷ কিন্তু সম্পূর্ণ কর্মবিরতি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ভেবে দেখা উচিত ৷ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রাখা দরকার ৷ তাঁরা পাশ থেকে সরে গেলে আন্দোলনের শক্তি ক্ষয় হবে ৷"
জুনিয়রা ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে একদমই সায় নেই সিনিয়র চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের । তিনি বলেন, "এতগুলো দাবি সরকার মানল । কিন্তু আবার কর্মবিরতি এটা মেনে নেওয়া যায় না । সাধারণ মানুষ পাশে ছিল । এবার তাঁরা সরে যাচ্ছেন । জুনিয়র চিকিৎসকদের বুঝতে হবে, আর্থিক অবস্থার দিক থেকে বেশিরভাগ মানুষ সরকারি হাসপাতালে যান । সেই দিকগুলো না-ভেবে যদি বারবার আমরা আন্দোলন করি, তাহলে একাংশ যে কথা বলছে সেটাই সত্যি । বেসরকারি হাসপাতালে ভিড় বাড়াতেই এই আন্দোলন ?"