মেদিনীপুর, 17 জানুয়ারি: কর্মবিরতির ডাক দিয়েও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে আপাতত স্বাভাবিক পরিষেবা চালু রাখলেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ তাঁদের বক্তব্য, আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকদের দল এলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা মতো আন্দোলনে নামা হবে ৷
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রসূতি ও সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ এনে সিনিয়র ও জুনিয়র মিলিয়ে 12 জন ডাক্তারকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সাসপেনশন অর্ডারের সঙ্গে এফআইআর করারও নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ৷
কর্মবিরতি ডেকেও মেদিনীপুর মেডিক্যালে কাজে জুনিয়র ডাক্তাররা (নিজস্ব ভিডিয়ো) এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা । মুখ্যমন্ত্রী যে 12 জন চিকিৎসকের তালিকা দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে 6 জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি । তাই জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ছিল, ওই 6 জন পিজিটির সাসপেনশন বাতিল করার পাশাপাশি অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে ।
কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা (নিজস্ব চিত্র) সেই মতোই আজ সকাল আটটা থেকে কর্মবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের সদস্যরা এসে না-পৌঁছনোয় স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে কর্মবিরতি থেকে আপাতত পিছু হঠেন জুনিয়র ডাক্তাররা । সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, আরজি করের টিম এলে তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করেই আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (নিজস্ব চিত্র) প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ছয়জন পিজিটি-সহ 12 জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা হওয়ার পর, স্বাস্থ্য ভবন থেকে বৃহস্পতিবারই নির্দেশিকা জারি করে মেদিনীপুর মেডিক্যালের নতুন সুপার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় সাগর দত্ত মেডিক্যালের অধ্যাপক ইন্দ্রনীল সেনকে । রাতেই দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছে যান তিনি । গাড়ি থেকে নেমে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তিনি ৷ শুধু বলেন, "সবে তো নেমেছি, কাগজপত্র আগে খতিয়ে দেখি, তারপর বলতে পারব ।"
দায়িত্ব গ্রহণের জন্য রাতেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে নয়া সুপার (নিজস্ব চিত্র) এদিকে, এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী, তিনিই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৷ অথচ এই ধরনের বড় ঘটনায় সঠিক তদন্ত না-করেই কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তারকে বলি দিয়ে তিনি সমস্যার সমাধান করে ফেলেন । বিষাক্ত ওষুধ ও স্যালাইনের জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা ধামাচাপা দিতে তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের বলি করছেন । আসলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সমস্ত ডিপার্টমেন্টেই দগদগে ঘা হয়ে গিয়েছে ।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষলেন দিলীপ ঘোষ (নিজস্ব চিত্র)