হিলি, 27 মার্চ: এবারের লোকসভা নির্বাচনে নিশ্চিতভাবেই হাইপ্রোফাইল বালুরঘাট কেন্দ্র ৷ এই আসনে আরও একবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন গতবারের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ দেখে নেওয়া যাক, নির্বাচিত হওয়ার পর সাংসদের দত্তক নেওয়া গ্রাম কেমন আছে ৷ গ্রামের বাসিন্দারা কী বলছেন ! কী বলছেন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা !
সাংসদ হওয়ার পর বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকরাম গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার ৷ মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই গ্রাম ৷ তবে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মানুষও গ্রামে বাস করেন ৷ সবাই মূলত কৃষিজীবী ৷ তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যাও বাড়ছে ৷ শহিদ চুড়কা মুর্মুর গ্রাম হিসাবে পরিচিত চকরাম ৷ যে চুড়কা নিজের জীবন দিয়ে খান সেনাদের হাত থেকে গ্রামকে বাঁচিয়েছিলেন ৷ বালক চুড়কার স্মৃতিতে আজও জন্ম ও প্রয়াণ দিবস পালন করা হয় ৷ শোনা যায়, চুড়কার জন্যই চকরাম গ্রামকে দত্তক নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন সাংসদ সুকান্ত ৷
তারপর চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে ৷ সাংসদের দত্তক নেওয়া গ্রামে বিদ্যুৎ, পানীয় কিংবা সেচের জল, নিকাশি, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যার কথা তেমন শোনা যায় না ৷ কিন্তু সব উন্নতিই মুখ থুবড়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ৷ পিচের চাদর কবেই উঠেছে ৷ এখন রাস্তার দাঁত বের করা অবস্থা ৷ মোটর বাইক কিংবা অন্য যানবাহন দূরের কথা, সাইকেলের চাকা থেকেও পাথর ছিটকে আসে ৷ এভাবে কত মানুষ যে আহত হয়েছেন, কতবার যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার কোনও ইয়ত্তা নেই ৷ অথচ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য নিজের সাংসদ কোটা থেকে 50 লক্ষ টাকা বরাদ্দও করেছেন সুকান্ত ৷ জেলা প্রশাসনকে বারবার সেই কাজ শুরু করার জন্য নাকি তদ্বির করেছেন ৷ তবে কাজ হয়নি ৷ সম্প্রতি গ্রামবাসারী খড়ের তৈরি ‘রাস্তার মৃতদেহ’ তৈরি করে এই হতশ্রী রাস্তায় সৎকারও করেছেন ৷ দেখিয়েছেন প্রবল বিক্ষোভ ৷ খবর পেয়ে পুলিশ এসেছিল ৷ অনেক পুলিশকর্মীকেও স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে লজ্জায় পড়তে দেখা যায় ৷
গ্রামবাসী রাণু দেবনাথ বলছেন, “সাংসদ দত্তক নেওয়ার পর গ্রামের অবশ্যই উন্নতি হয়েছে ৷ তবে রাস্তা ঠিক হতে দিচ্ছে না বিরোধী দল ৷ আগে তো কিছুই ছিল না ৷ আরএসপি-র আমলে রাস্তা হয়েছিল ৷ তারপর আর রাস্তার সংস্কার হয়নি ৷ সাংসদ রাস্তা সংস্কারের জন্য টাকাও দিয়েছেন ৷ কিন্তু এরা সেই কাজ করছে না ৷ সুকান্তবাবু যদি আবারও সাংসদ নির্বাচিত হন, তবে তাঁর কাছে আরও জল, ড্রেন চাইব ৷”
কর্মসূত্রে রোজ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় রিক দে সরকারকে ৷ তিনি জানাচ্ছেন, “গ্রামের মূল সমস্যা রাস্তা ৷ এই রাস্তার জন্যই আমাদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ ৷ চলাচল করাই যায় না ৷ আমি এক বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছি ৷ রাতবিরেতে এই রাস্তা দিয়ে অসুস্থদের হাসপাতাল নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হয় ৷ 10 মিনিটের রাস্তা পেরোতে আধঘণ্টা সময় লাগে ৷ আমারও দাবি, নতুন রাস্তা ৷”