কলকাতা, 30 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালের মর্গে বেওয়ারিশ ও শনাক্ত না-হওয়া মৃতদেহের হিসাব পাচ্ছেন না সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা । সিবিআইয়ের অভিযোগ, তাঁরা 2021 সাল থেকে 2024 সাল পর্যন্ত এই সংক্রান্ত হিসেবের রিপোর্ট হাসপাতালের তরফ থেকে পেয়েছেন । তবে 2021 সালের আগের কোনও বেওয়ারিশ দেহের হিসেব নেই হাসপাতালে কাছে । 2021 সালের আগের পরিচয়হীন মৃতদেহের তালিকা এখনও সিবিআই-কে দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দুর্নীতি হচ্ছে বলে 2023 সাল থেকে সরকারের বিভিন্ন দফতরকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি । আদালতের নির্দেশে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই ৷ এই ঘটনার নানা সূত্র পেতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমেছেন সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা ৷ গতকাল তাঁরা সরাসরি পৌঁছে যান হাসপাতালে । সেখানে প্রথমে তাঁরা পুলিশ মর্গ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন । পরে হাসপাতালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন গোয়েন্দারা । পরে তাঁরা হাসপাতালের বেওয়ারিশ ও শনাক্ত না-হওয়া মৃতদেহগুলির একটি তালিকা চান হাসপাতালের কাছে ।
2021 সাল থেকে 2024 সালের মধ্যে যে সব বেওয়ারিশ দেহ বা পরিচয়হীন দেহগুলি ছিল, তার তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে । কিন্তু 2021 সালের আগে এই সংক্রান্ত হিসেব হাসপাতালের কাছে নেই বলে জানানো হয় ।
এর আগে, আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি অভিযোগ করেছিলেন যে, হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানায় হাসপাতালে একাধিক দুর্নীতি হয়েছে । মেডিক্যাল বর্জ্য থেকে শুরু করে দেহ পাচার-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করেন তিনি ৷
সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর ফের নতুন করে সরব হয়েছেন আখতার আলি । তড়িঘড়ি এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে এক বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয় । তবে প্রশ্ন ওঠে, এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর কেন রাজ্য সরকার এই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করল । এরপরে আদালতের তরফ থেকে এই দুর্নীতির তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে । এই দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা হাসপাতালে অশনাক্ত ও বেওয়ারিশ দেহের হিসাব পাচ্ছেন না ।
পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে যে, আরজি কর হাসপাতালে দেহ সংরক্ষণ করার জন্য যথেষ্ট ভালো পরিকাঠামো রয়েছে । সেক্ষেত্রে নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি কেন সৎকার করে দেওয়া হল ? কেন তা মর্গে রাখা হল না ? এই সব ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছেন, তা জানার জন্য ইতিমধ্যেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছেন গোয়েন্দারা । পাশাপাশি গতকাল হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির সঙ্গেও নিজাম প্যালেসে দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেন সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা ।