চন্দননগর, 27 ফেব্রুয়ারি: শ্রীরামপুরে ডেনিস ট্রাভানের পর সংস্কার হতে চলেছে ফরাসি আমলের তৈরি রেজিস্ট্রি অফিস । দীর্ঘ বছরের ইতিহাস বহন করে আসছে চন্দননগর মহকুমা অফিসের সামনে অবস্থিত এই পরিত্যক্ত বাড়ি । ফরাসি আমলেই এই বাড়ি থেকেই সরকারি রেভিনিউ আদায়, আর্থিক লেনদেন ও ফরাসি আদালত চলত । যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব ভারত ও ফরাসি সরকারের কাছে অপরিসীম । সেই কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও ফরাসি সরকারের যৌথ উদ্যোগে নতুন রূপে সাজতে চলেছে এই ইতিহাস বিজড়িত এই দ্বিতল বাড়ি । ট্যুরিজমকে তুলে ধরার জন্য রেজিস্ট্রি অফিস বিল্ডিংয়ে সংস্কার করা হবে । আগামী দু'বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে । এখানে তৈরি হবে মিউজিয়াম, লাইব্রেরি, ট্যুরিস্টদের জন্য গেস্ট হাউস, সেমিনার হল ও ক্যাফেটেরিয়া । রাজ্য সরকার প্রায় 5 কোটি থেকে 6 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই স্থাপত্য সংস্কারের জন্য । যা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে ।
পন্ডিচেরী ফ্রেন্ডস হেরিটেজের উদ্যোগে কনজার্ভেশন আর্কিটেক ঐশ্বরিয়া টিপনিসের (Aishwarya Tipnis) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ফরাসি স্থাপত্যগুলিকে খোঁজা ও চিহ্নিত করা । পন্ডিচেরীর পর ইন্দো-ফরাসি স্থাপত্য ছড়িয়ে আছে এই গোটা চন্দননগরে । এখানে ঐতিহাসিক জিনিসের তালিকা তৈরি করা হয় । সেই তালিকার মধ্যে মোট 99টি স্থাপত্য নথিভুক্ত করা হয় 2010 সালে । যেটা পর্যটনের ক্ষেত্রে বড় মাত্রা পাবে চন্দননগরে । ফরাসি আমলে ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট, রেস্টুরেন্টে ও হোটেল (বর্তমানে চন্দননগর কোর্ট ), ওয়াচ টাওয়ার-সহ একাধিক স্থাপত্য রয়েছে । এই ঐতিহাসিক স্থানগুলির জন্য সারাবছর দেশ বিদেশের বহু পর্যটক আসেন । সেই কারণে এই স্থানগুলোকে সাজিয়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ ।
রাজ্য সরকার প্রায় 5 কোটি থেকে 6 কোটি টাকার বিনিময়ে ভগ্নপ্রায় রেজিস্ট্রি অফিস পুনরূদ্ধার করবে । সেই অনুযায়ী কিছুদিন পর কাজও শুরু হবে । রাজ্যের আর্থিক সাহায্য ও ফরাসি সরকারের প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় এই কাজ হচ্ছে । টেন্ডারের কাজও শুরু হবে । সেই জন্য এই প্রথম রবিবার ভারতে ফরাসি রাষ্ট্রদূত তিয়েরি ম্যাথু ও কলকাতার কনসল জেনারেল দিদিয়ের তালপাইন (Didier Talpain)আসেন এটি দেখতে । ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেন তাঁরা । আগামিদিনে ইন্দো-ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতির আদান-প্রদান মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে এই কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট ও মিউজিয়ামের ডিরেক্টর বাসবী পাল ।