পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

24 ডিসেম্বর রাতে যিশুর আরাধনা হয় রামকৃষ্ণ মিশনে, কেন জানেন ? - RAMAKRISHNA MISSION WORSHIPS JESUS

বড়দিনের আগের রাতে দেশের বিভিন্ন গির্জায় প্রার্থনা শুরু হয়ে যায়। রাত নামলেই ক্যারেল মিউজিক, প্রার্থনার সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে প্রভু যিশুর প্রতি প্রার্থনায় মেতে ওঠেন মানুষ।

Ramakrishna Mission worships Jesus
রামকৃষ্ণ মিশনে যিশুর আরাধনা (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 23 hours ago

Updated : 23 hours ago

আসানসোল, 25 ডিসেম্বর: বড়দিনের ঠিক আগে অর্থাৎ 24 ডিসেম্বর রাতে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনগুলিতে যিশুর আরাধনা হয় ৷ আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে বেশ জাঁকজমক করে হয় যিশুর আরাধনা ৷ প্রার্থনা, ক্যারল সঙ্গীত, বাইবেল পড়া থেকে শুরু করে কেক, পেস্ট্রি, চকলেট সহযোগে যিশুকে ভোগ নিবেদন করা হয়। কিন্তু কেন এই নিয়ম ?

বড়দিনের আগের রাতে দেশের বিভিন্ন গির্জায় প্রার্থনা শুরু হয়ে যায়। রাত নামলেই ক্যারেল মিউজিক, প্রার্থনার সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে প্রভু যিশুর প্রতি প্রার্থনায় মেতে ওঠেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষজন। বিভিন্ন গির্জায় ভিড় উপচে পড়ে এবং মধ্যরাত পর্যন্ত এই প্রার্থনা চলে।

কেন রামকৃষ্ণ মিশনে হয় যিশুর আরাধনা ? (ইটিভি ভারত)

কিন্তু জানেন কি রামকৃষ্ণ মিশনেও 24 ডিসেম্বর রাতে যিশুর আরাধনা ও প্রার্থনা কেন করা হয় ? গাওয়া হয় ক্যারল সঙ্গীত বা প্রার্থনার গান। রামকৃষ্ণ মিশনের রীতি রয়েছে 24 ডিসেম্বর রাতে যিশুর বিশেষ উপাচারে পুজো-আর্চা করা।

আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে দেখা গেল বেশ জাঁকজমক করে যিশুর আরাধনার আয়োজন। রামকৃষ্ণ মিশনের আবাসিক ছাত্র থেকে শুরু করে মহারাজেররা ক্যারল প্রার্থনা সঙ্গীত পরিবেশন করছেন ৷ মোমবাতির আলোয় যিশুকে আরাধনা করা হচ্ছে ৷ ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়েছে চকলেট চানাচুর-সহ আরও নানান উপাচার। মহারাজ পাঠ করে শোনাচ্ছেন বাইবেলের মাহাত্ম্য। প্রচুর ভক্তকুলের ভিড় জমে। তাঁরা এক মনে যিশুর আরাধনা করছেন ৷ রামকৃষ্ণ মিশনের দীক্ষিত শিষ্যরা যিশুর আরাধনায় করছেন ৷ এই ঘটনার পিছনে স্বামীজীর যোগসূত্র রয়েছে বলে জানান রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজরা ৷

আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন (নিজস্ব চিত্র)

1886 সালের 24 ডিসেম্বর, হুগলির আঁটপুরে বাবুরাম ঘোষের বাগান বাড়িতে আসেন স্বামী বিবেকানন্দ-সহ রামকৃষ্ণের আরও 8 জন শিষ্য। সেদিন সেই বাগানবাড়িতে ধুনি জ্বেলে স্বামীজী ও বাকি শিষ্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ন্যাস গ্রহন করেন। এমনকি বাবুরাম ঘোষও সেদিন স্বামীজীর সঙ্গে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। পরে তাঁর নাম হয় স্বামী প্রেমানন্দ। আশ্চর্যের বিষয় ধ্যানস্ত অবস্থায় স্বামীজী প্রভু যিশুর মাহাত্ম্য নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন বাকি সঙ্গীদের সঙ্গে ৷ তাঁদের মনেও ছিল না, পরের দিনই যিশুর আবির্ভাব দিবস। আর তাই, এই 24 ডিসেম্বর দিনটিকে 'ত্যাগের দিন' বা 'রিনানসিয়েশন ডে' বলা হয়। যেহেতু স্বামীজী সেই রাতে যিশুর বাণী ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছিলেন, তাই প্রতিটি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে যিশুর আরাধনা করা হয় ৷ একইসঙ্গে বাইবেল পাঠ করা হয়।

আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে যিশুর আরাধনা (নিজস্ব চিত্র)

আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সিদ্ধানন্দ জানান "আমরা প্রভু যিশুকেও ঈশ্বরের আরেক অবতার মনে করি। তাই আবির্ভাব তিথির প্রাক্কালে তাঁকে আরাধনা করা হয়। তাঁর কাছে প্রার্থনা করি আমরা।" ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য নজির ও দৃষ্টান্ত স্থাপন হয় রামকৃষ্ণ মিশনে। যেখানে হিন্দু মন্দিরে প্রভু যিশুকে নিষ্ঠাভরে প্রার্থনা করা হয়।

Last Updated : 23 hours ago

ABOUT THE AUTHOR

...view details