কলকাতা, 30 অক্টোবর: সরকারি হাসপাতাল থেকে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়া চিকিৎসকদের অনেকেই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন । সেখান থেকে মোটা টাকা আয় করেন তাঁরা । এবার রাজ্য সরকার চাইছে এই ছবিটা বদলাক । সরকারি হাসপাতালের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়াতে এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চাইছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত থাকার ক্ষেত্রে এখনই কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে না ৷ তবে স্বাস্থ্য ভবন থেকে এনওসি নিয়ে তবেই তাঁদের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা দিতে হবে, এমন নিয়ম আনার চেষ্টা চলছে ।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন, যা রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় । তিনি বলেন, আরজি করের নির্যাতিতার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ স্বরূপ যেই সময়টায় চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন সরকারি হাসপাতালে, বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন, সেই সময়ই তাঁরা আবার বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে পরিষেবাও দিয়েছেন । গোটা বিষয়কে যথেষ্ট অনৈতিক বলে মতপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ।
তিনি সেদিন তথ্য দিয়েছিলেন, কর্মবিরতি চলাকালীন 563 জন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করে টাকা নিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রী সেদিন প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন, এটাকে কি ক্রিমিনাল অফেন্স বলা হবে না ? সেদিন থেকেই মনে করা হচ্ছিল যে, বিষয়টি নিয়ে কঠোর হতে পারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর । তারপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এনওসি বিষয়টিতে কড়াকড়ি করা হবে ।
নয়া নিয়ম চালু হলে, স্বাস্থ্য ভবন এনওসি দিলে তবেই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারবেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা । অপারেশন বা ওপিডি-র ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ভবনের এনওসি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে । ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুসারে এটা বাধ্যতামূলক । মূলত এই আইনকে সামনে রেখেই নবান্নের অনুমোদনের বিষয়টির কথা বলা হয়েছে । এক্ষেত্রে নবান্ন সবুজসংকেত দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে ।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, "পুরো বিষয়টি এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোর্টে । তিনি এই বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন । অতীতে এই বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ধীরে চলার নীতি নিয়েছিলেন তিনি । এখন দেখার তিনি এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন ।"
উল্লেখ্য, 2023-এও এই ধরনের একটা প্রস্তাব নবান্নের কাছে পাঠানো হয়েছিল । কিন্তু সে সময় তা গ্রহণ করেনি নবান্ন । তবে আরজি কর আবহে আরও একবার একই ধরনের পদক্ষেপ করার চেষ্টা হচ্ছে । এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে সিলমোহর দেন কি না ।