মালদা, 4 সেপ্টেম্বর: বন্যা পরিস্থিতিতে নৌকার জন্য দীর্ঘ চার ঘণ্টা অপেক্ষা ৷ অবশেষে মালদা মেডিক্যালে পৌঁছেও রক্তশূন্যতার জেরে মৃত্যু হল অন্তঃসত্ত্বার ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মানিকচক ব্লকে দক্ষিণ চণ্ডীপুর এলাকায় । মৃতার নাম বিউটি মণ্ডল (25) । তাঁর বাড়ি ভূতনির হীরানন্দপুরে ।
বন্যার জেরে পৃথিবীর আলো দেখল না শিশু (ইটিভি ভারত) বিউটির শ্বশুর নিশীথকুমার মণ্ডলের কথায়, "বিকেল চারটে নাগাদ বউমার রক্তক্ষরণ শুরু হয় । পুরো এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি থাকায় নৌকা ছাড়া বউমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উপায় ছিল না । নৌকার জন্য চারিদিকে খোঁজ চালানো হয় । রাত আটটা নাগাদ নৌকা মেলে । বউমাকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসতে আসতে রাত এগারোটা বেজে যায় । ততক্ষণে বউমা প্রায় রক্তশূন্য হয়ে পড়েছে । অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে বউমার মৃত্যু হয় । সময় মতো নৌকা পাওয়া গেলে বউমাকে বাঁচানো যেত ।"
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় 6 বছর আগে দক্ষিণ চণ্ডীপুরের বাসিন্দা প্রতাপ মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় বিউটির । তাঁদের এক পুত্র সন্তান রয়েছে । বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি । মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় রক্তক্ষরণ শুরু হয় বিউটির । পরিবারের লোকজন তাঁকে মালদা মেডিক্যালে আনার জন্য নৌকার খোঁজ শুরু করেন ।
পরিবারের অভিযোগ, অনেক জায়গায় নৌকার খোঁজ চালানোর পরও নৌকা মেলেনি । যাঁদের নৌকা ছিল তাঁরা মোটা টাকা দাবি করছিলেন । অবশেষে রাত আটটা নাগাদ নৌকা মেলে । মালদা মেডিক্যালে পৌঁছতে রাত এগারোটা বেজে যায় । ততক্ষণে রক্তক্ষরণ হতে হতে নেতিয়ে পড়েছিলেন বিউটি । চিকিৎসকরা রক্ত জোগাড় করার কথা বলেন । কিন্তু রাত একটা নাগাদ মৃত্যু হয় বিউটির । তাঁর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ।
মৃতের স্বামীর বন্ধু বিশাল ঘোষ বলেন, "বন্ধুর বউ আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন । গতকাল বিকেল থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল তাঁর । খবর পেয়ে চারিদিকে নৌকোর জন্য ছুটোছুটি করেছি । এমনকি পঞ্চায়েতেও ফোন করেছিলাম । কিন্তু কোথাও নৌকো পাওয়া যায়নি । যাঁদের কাছে নৌকো ছিল তাঁরা কেউ তিন হাজার তো কেউ চার হাজার টাকা দাবি করছিল । অবশেষে রাত আটটা নাগাদ আমরা নৌকার ব্যবস্থা করতে পারি । সময় মতো নৌকা পেলে এই ঘটনা ঘটত না ।"