ব্যারাকপুর, 18 অগস্ট: প্রতিবাদ আন্দোলন ঘিরে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে রবিবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুললেন আরজি করে নিহত চিকিৎসকের পরিবার ৷ এদিন বিকেলে সোদপুরের বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত কথা বলছেন ৷ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন ৷ বলছেন নির্যাতিতার বিচার চাই ৷ আবার তিনিই আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করছেন ৷ তিনি কি সাধারণ মানুষকে ভয় পাচ্ছেন ? তিনি কেন দ্বি-চারিতা করছেন ? যাঁরা মুক্তকণ্ঠে এই ঘটনার প্রতিবাদ করছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কণ্ঠকে রোধ করার চেষ্টা করছেন ।"
সিবিআই-এর তদন্ত কি কোথাও ধীরগতিতে চলছে ? রাঘববোয়ালদের ধরার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কি সময় নিচ্ছে ? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীর বাবা বলেন, "সেটা আমরা সিবিআইয়ের উপর ছেড়ে দিচ্ছি । তাঁদের উপর আস্থা তো রাখতেই হবে ৷ এছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই ৷"
অন্যদিকে, পুলিশের হাতে বাজেয়াপ্ত হওয়া নির্যাতিতা ডাক্তারি ছাত্রীর ডায়েরি থেকে বেশ কিছু পাতা উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । যেটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের-ও নজরে এসেছে বলে খবর সূত্রের ৷ সেই বিষয়ে এদিন প্রশ্ন করা হলে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা আক্ষেপের সুরে বলেন, "বিষয়টি আমরা শুনেছি ৷ তার প্রমাণও রয়েছে আমাদের কাছে। ডায়েরির পাতার ছবি তোলা রয়েছে ৷ সিবিআই আধিকারিকরা জানতে চাইলে আমরা বিষয়টি জানাব ৷ তখন তাঁদের হাতে সেই প্রমাণও তুলে দেব ৷ মৃত্যুর আগেও মেয়ে লিখে রেখে গিয়েছিল ডায়েরিতে । তবে, বিচারাধীন বিষয় কিছু বলতে পারব না । এটুকু বলতে পারি, ও সবসময় চেয়েছিল সুখে শান্তিতে থাকতে ৷ এর সঙ্গে আগের কোনও ঘটনার যোগ নেই ।"
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে কী বললেন নির্যাতিতার মা ?
নির্যাতিতা চিকিৎসকের মায়ের কথায়, "মেয়েকে সবসময় চাপে রাখতেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ । সামান্য শরীর খারাপ হলেও মেয়েকে ছুটি দেওয়া হত না ৷ ওঁদের কথামতো চলতে হত মেয়েকে ৷ তা না হলে মেয়েকে ফেল করিয়ে দেওয়া হবে বলত ৷ কখন বাড়ি ফিরব ৷ বাড়ি ফিরে কী সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করব ৷ এ সমস্ত বিষয়গুলিই মেয়ে লিখে রাখত ডায়েরিতে ৷ এই নিয়ে ও খুব সিরিয়াস ছিল । মেয়ে চেয়েছিল, পড়াশোনা করে এমডি-তে গোল্ড মেডিলিস্ট হতে । সেটা কোথাও হয়তো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল । সেকারণেও মেয়ের এই পরিণতি হতে পারে । রাজ্যের মানুষের কাছে একটাই আবেদন রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার আগে আপনার বাড়ির লক্ষ্মী সুরক্ষিত আছে তো ? একবার ভেবে দেখুন । এসব সুবিধা দিয়ে সরকার অসহায় পরিবারের মুখ বন্ধ করতে চাইছে ৷"