পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

ভূতে ধরেছে ! চুঁচুড়ায় তালা-শিকলে বন্দি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী - Chuchura Student Chained - CHUCHURA STUDENT CHAINED

Chuchura Student Locked and Chained: তালা-শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ৷ অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়ার কেওটার হেমন্ত বসু কলোনিতে ৷ খবর পেয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা ৷ কেন ?

Chuchura Student Locked and Chained
চুঁচুড়ায় তালা-শিকলে বন্দি মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 16, 2024, 10:32 PM IST

Updated : Jun 16, 2024, 10:49 PM IST

চুঁচুড়া, 16 জুন: ভূতে ধরেছে তাকে ৷ ভূত তাড়াতে 8 দিন ধরে তাই তালা-শিকল দিয়ে বাঁধা রয়েছে কিশোর । এমনই অমানবিক ছবি দেখা গেল চুঁচুড়ার কেওটার হেমন্ত বসু কলোনিতে ।

চুঁচুড়ায় তালা-শিকলে বন্দি কিশোর (ইটিভি ভারত)

বছর ষোলোর কিশোরের নাম আকাশ মালাকার । মাধ্যমিকের ছাত্র সে । হঠাৎ বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছিল সে ৷ পরিবারের লোকজন সামলাতে পারছিলেন না । তাই বাধ্য হয়ে তার হাতে পায়ে শিকল বেঁধে রেখে দেন তাঁরা । প্রতিবেশীরা জানান, ওই কিশোরকে নাকি ভূতে ধরেছে । সেকারণে বিভিন্ন ওঝা, গুনীনের কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে ৷ তাবিজও পরানো হয় তাকে । এরপরও কোনও ফল পাওয়া যায়নি ৷ তাই বাধ্য হয়ে তালা-শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় আকাশকে ।

এভাবেই চলছিল দিন । স্থানীয় সূত্রে খবর পায় বিজ্ঞান মঞ্চ । তাদের তরফে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় । তারপর তাদের কথাতে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে আকাশের পরিবার । শুক্রবার চুঁচুড়া থানার পুলিশও বিষয়টি দেখতে আসে । কিশোরের বাবা কার্তিক মালাকার ডাব বিক্রি করে সংসার চালান । তিনি বলেন, "ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে । প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল সেদিন । রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বাড়ি যেতে বলি । পরে বাড়িতে ফিরে চেঁচামেচি শুরু করে । আমরা তাকে ধরে রাখতে পারছিলাম না । হাত পা চালাতে থাকে । তারপর তাকে শিকল দিয়ে বাধার সিদ্ধান্ত নিই ।"

সেইসঙ্গে তিনি বলেন, "ভূতে ধরলে যেরকম হয়, সেরকম চিৎকার চেঁচামিচি করছিল সে । আমরা 10-12 জন মিলেও ধরে রাখতে পারছিলাম না ৷ অবশেষে চেন-তালা দিয়ে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়েছি ৷ ওঝা-বদ্দি করেছি । পূর্ব বর্ধমানের বড়শূলে ওঝার বাড়ি যাই । স্থানীয় ভাবেই মাদুলি করানো হয় । কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে তারা দেয় জল পড়া ও মাদুলি । যদিও তাতে ছেলের বিন্দুমাত্র কাজ হয়নি । এরপর ডাক্তার সঙ্গে কথা বলছি ।"

ঘটনাপ্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, "আমরা খবর পেয়ে এসেছি । এখনও শহরাঞ্চলের মানুষ যে কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন, তা এই ঘটনা দেখে বোঝা যায় । এর আগেও এধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে ৷ প্রাণ পর্যন্ত হারাতে হয়েছে অনেককে । আমরা তাই কিশোরের পরিবারকে বলেছি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে । কুসংস্কার দূরে রেখে চিকিৎসা স্বাস্থ্যের উপর আস্থা রাখতে হবে । এই এলাকায় আমরা সচেতনতা শিবির করব । প্রশাসনের কাছে আবেদন, এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।"

Last Updated : Jun 16, 2024, 10:49 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details