খড়দা, 24 পরগনা: বকেয়া টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বচসা। তার জেরে এক ফেরিওয়ালাকে পিটিয়ে খুনের পর দেহ ছাদে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সোদপুরের সুখচর বাজারপাড়া এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম আক্রম আলি। তাঁর বাড়ি কামারহাটিতে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চিরাগ গুহ নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে খড়দা থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কামারহাটির বাসিন্দা আক্রম প্রতিদিন সুখচর এলাকায় লোহা ও টিন ভাঙা কিনতে আসতেন। দীর্ঘদিন ওই এলাকায় যাতায়াতের ফলে চিরাগের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। মাসতিনেক আগে ওই যুবক আড়াই হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন আক্রমের কাছ থেকে। কিন্তু ধারের সেই টাকা যুবক কিছুতেই শোধ করছিলেন না বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এই ধারের টাকা নিয়ে আক্রমের সঙ্গে বচসা হয় ওই যুবকের। তারই মধ্যে রবিবার সকালে বকেয়া টাকা ফেরত চাইতে আক্রম গিয়েছিল চিরাগের সোদপুরের বাড়িতে। তখন আবারও দু'জনের মধ্যে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। অভিযোগ, এরপরই চিরাগ আক্রমকে ডেকে ঘরের ভিতরে নিয়ে যায়। ওই ব্যাক্তির চিৎকার শুনে ছুটে আসে প্রতিবেশীরাও।
কিন্তু, যুবকের বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। স্থানীয়রা চিৎকারের কারণ জানতে চাইলে চিরাগের মা তাঁদের বলেন, "ছেলেকে কুকুরে কামড়েছে। তাই সে চিৎকার করছে।" এ কথা শুনে পড়শিরা ফিরে যায় ৷ এরপর, রাত থেকে আচমকাই চিরাগের মা উধাও হয়ে যান। বিষয়টি প্রতিবেশীদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। শুধু তাই নয়, বাড়ি থেকেও দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এরপরই খবর দেওয়া হয় খড়দা থানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বাড়ির ছাদ থেকে আক্রমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। পাশাপাশি, যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, দেহের গলায় ও মুখে লোহার তার প্যাঁচানো ছিল। তাই, পুলিশের অনুমান মৃত্যু নিশ্চিত করতেই এই পন্থা বেছে নিয়েছিল ওই যুবক।
বিষয়টি নিয়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁ বলেন, "খুনের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত যুবক। ধৃত যুবকের মায়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে। শুধু পাওনা টাকা নিয়ে বচসা নাকি ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার ধৃতকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।"