ব্যারাকপুর, 21 অগস্ট:আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা ডাক্তারি তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা পানিহাটি শ্মশান ম্যানেজার অবশেষে মুখ খুললেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। আরজি কর হাসপাতাল-কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবার আগেই অভিযোগ করেছিল, পুলিশের তরফে চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি পানিহাটি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল? এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন পানিহাটি শ্মশানের ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্র।
তিনি বলেন, "সংবাদমাধ্যমের সামনে নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে তড়িঘড়ি দেহ সৎকার করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও,সেদিন শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সময় মৃতা তরুনীর মা কোনওরকম বাধা সৃষ্টি করেননি।"
তবে, ওইদিন সন্ধ্যার বেশ কিছুটা পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে যে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন শ্মশান ম্যানেজার ভোলানাথ । এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"সেদিন পুলিশের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলা হয়, স্থানীয় একটি মেয়ের দেহ আসবে পানিহাটি শ্মশানে।" যদিও ততক্ষণে টিভির পর্দায় দেখে ঘটনার কথা জেনে গিয়েছিলেন শ্মশানে কর্মরত ম্যানেজার-সহ কর্মীরাও। এরপরই শ্মশান চত্বরে ভিড় জমতে শুরু করে।
ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্রের কথায়, "সৎকারের সময় স্থানীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি সকলেই হাজির ছিলেন । ছিল পুলিশের বিশাল বাহিনীও। ফলে, সংকীর্ণ জায়গায় রীতিমতো ভিড় জমে যায় । পরিস্থিতি সামাল দিতেই নির্যাতিতা তরুণীর আগে দুটি দেহ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের রেখে তৃতীয় সারিতে থাকা নির্যাতিতা ছাত্রীর দেহ সৎকার করা হয়েছিল আগে। এর মধ্যে অন্য কোনও ব্যাপার ছিল না। কেবলমাত্র মানবিকতার খাতিরেই নির্যাতিতা ছাত্রীর দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল এই শ্মশানে ।"
এ বিষয়ে তিনি আরও ব্যাখা দিয়ে বলেন, "একদিকে গোটা এলাকায় ভিড় থাকায় পুলিশের তরফ থেকে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। অন্যদিকে, তিনিও চেষ্টা করছিলেন দ্রুত যাতে সৎকারের ব্যবস্থা করে শোকাহত পরিবারকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া যায়। এই কথা ভেবেই, আগে থাকা দুটি মৃতদেহের পরিজনদের অনুরোধ করা হয়। বিষয়টি জানতেন নির্যাতিতার পরিবার।" তাঁদের সম্মতিতেই নির্যাতিতা তরুণীর দেহ সৎকারের কাজ আগে করা হয়েছিল৷ এমনটাই দাবি করেছেন পানিহাটি শ্মশানের ম্যানেজার। তবে,স্থানীয় এলাকার তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই পাশবিক ঘটনায় দোষীরা সাজা পাক, সেটাও চেয়েছেন ভোলানাথ।
এদিকে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ইতিমধ্যে এই বিষয়ে নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাঁদের মতে, "আগে দুটি মৃতদেহ থাকা সত্ত্বেও, কেন তড়িঘড়ি পানিহাটি শ্মশানে ওই নির্যাতিতার সৎকার করা হল? তবে কী কোনও তথ্য গোপন করতেই এই প্রচেষ্টা? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। যদিও,সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পানিহাটি শ্মশানের ম্যানেজার ভোলানাথ পাত্র।