কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ড এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে যা বলার বলবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও নেতা বা মন্ত্রী যেন মুখ না খোলেন। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে কটাক্ষ করে বিরোধীদের বক্তব্য, চুপ থাকতে বলে নেতা-মন্ত্রীদেরই দোষী সাজাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে রাহুল সিনহা বলেন, "উনি এখন বেকায়দায় পড়ে গিয়ে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। যেন অন্যদের দোষে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সমস্যা তো উনিই তৈরি করেছেন। গোড়া থেকেই যদি উনি পুলিশকে সঠিক ব্যবস্থা নিতে বলতেন, তাহলে আজকের এই দিন দেখতে হত না ৷ কারণ পুলিশের তো কোন স্বার্থ নেই। পুলিশ যে কাজগুলো করেছে এবং করতে হচ্ছে, এর কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশ সব কাজ করেছে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের কি এমন সম্পর্ক, এখন সেটাই বড় সন্দেহের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷"
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "উনি কেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে কথা বলতে বারণ করছেন ? মুখ্যমন্ত্রী নিজেও কী কথা বলতে পারেন তা নির্যাতিতার বাবা-মায়ের থেকে আমরা জেনেছি। এই নির্মম ঘটনা নিয়ে সকলেই আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছেন। বিচার চাইছেন। সেটা মেনে নিতে পারছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।"
সিপিএমের তরফে রবিন দেব বলেন, " এটা সম্মিলিত আন্দোলনের ফল। এখন বলেছেন, তিনি আলোচনায় রাজি আছেন ৷ এখনও পর্যন্ত যা যা ঘটেছে বা ঘটছে, তার দায় দলনেত্রীর। তিনি এতদিন পদাধিকারী সরকারি কর্মী কিংবা দলের নেতাদের দিয়ে নানান রকম কথা বলিয়েছেন ৷ আর এখন সেটা সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে ৷ এর জন্য তিনিই দায়ী। তিনি আবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী। ফলে সমস্ত ঘটনার দায়-দায়িত্ব জবাবদিহি ওনাকেই করতে হবে ৷"
আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে প্রতিবাদে যেমন সরব হয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা তেমনই পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। অবিরত চলছে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি এবং আন্দোলন। মঙ্গলবার রাত থেকেই স্বাস্থ্য ভবনের অদুরেই চলছে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান।
মঙ্গলবার নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতা ও মন্ত্রী-সহ দলের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আরজি কর এবং চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয় একেবারে চুপ থাকতে বলেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, কেউ যেন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না-করেন ৷ কারণ অনেকেই অনেক রকম বেফাঁস কথা বলে ফেলছেন। তাই চিকিৎসকদের আন্দোলন এবং আরজি কর কান্ড নিয়ে যা বলার একমাত্র তিনিই বলবেন। সম্প্রতি কোন্নগরের একটি 22 বছরের যুবকের আরজি করে এসে চিকিৎসা না-পেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷