পানিহাটি, 22 জুলাই: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল উত্তর 24 পরগনার পানিহাটি। গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে দলেরই যুব নেতার অফিসে হামলা থেকে শুরু করে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরে সোমবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় পানিহাটি পৌরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশকে সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে। পরে, ক্ষুদ্ধ কর্মী,সমর্থকদের এলাকা থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ (ইটিভি ভারত) ঘটনার সূত্রপাত ওয়ার্ডেরই যুব সভাপতির উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সুমিত পাল ওরফে রানা নামে ওই তৃণমূল নেতাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে পরিতোষ দাস গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যিনি আবার পশ্চিম পানিহাটি যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বুবাই মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রবিবার রাতের সেই ঘটনার রেশ আছড়ে পড়ে সোমবার সকালে। এরপরই, দলের অপর গোষ্ঠীর লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে ঈশ্বর চ্যাটার্জী রোডে যুব নেতা বুবাই মল্লিকের অফিসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। অফিসের যাবতীয় জিনিস ভেঙে দেন হামলাকারীরা। চলে চেয়ার, টেবিল এবং আসবাবপত্র ভাঙচুরও। সেখানে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর পর শাসকদলের লোকজন পাশেই দত্ত রোডে আরও একটি দোকানে হামলা এবং ভাঙচুর চালিয়ে জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলে দেয় অভিযোগ।
এই দোকানে পরিতোষ দাসের নিয়মিত যাতায়াত আছে। শুধু তাই নয়, এখান থেকেই তিনি যাবতীয় অসামাজিক কার্যকলাপ চালান বলে অভিযোগ। যার ফলে হামলাকারীদের রোষ এসে পড়েছে বিটি রোডের ধারে এই দোকানের উপরেও। এই বিষয়ে সুমিত পাল বলেন, "রবিবার রাতে অমরাবতী এলাকায় আমার একটি নিমন্ত্রণ ছিল। সেখান থেকে আমার বন্ধু দেবাঞ্জন আমাকে বাইকে করে বাড়িতে ছাড়তে যাচ্ছিল। সেই সময় একটা চারচাকা গাড়ি আমাদের পথ আটকায়। দেবাঞ্জন বাইক থেকে পড়ে যায়। তারপর পরিতোষ দাস আমায় গাড়িতে তুলে মারধর করে। এমনকী প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়।"
এদিকে, যার বিরুদ্ধে পরিতোষ দাসকে প্রশয় এবং মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেই পশ্চিম পানিহাটি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি বুবাই মল্লিক বলেন, "পানিহাটিরই বেশ কয়েকজন নেতা অনেকদিন ধরেই আমাকে শাসাচ্ছিলেন যাতে আমি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাই। একুশে জুলাই যাতে কলকাতার সমাবেশে না যাই। তাঁদের কারও নাম আমি নিচ্ছি না। অফিসে এসেও এনিয়ে আমাকে শাসানো হয়েছিল। তা স্বত্তেও আমি একুশে জুলাই শহিদ দিবসে গিয়েছিলাম। তাই সেদিন কী হয়েছিল জানি না। তারপর এদিন এই ঘটনা ঘটে। অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ থানায় জানিয়েছি।দলের নেতৃত্বকেও বলেছি। আমার জন্য হয়তো কারও অসুবিধা হচ্ছে। তাই এটা করেছেন।" অন্যদিকে, খড়দা থানায় দু'পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।