কোচবিহার, 11 মার্চ: দীর্ঘ সময় পার করে লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে লাগু হয়ে গেল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ (Citizenship Amendment Act) ৷ সোমবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিএএ লাগু হওয়ার কথা জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সিএএ আসলে নাগরিকত্ব দেবার আইন বলে মত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের ৷ অন্যদিকে, এক্স হ্যান্ডেলে ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ স্মরণ করার দিন বলে মত শুভেন্দু অধিকারীর ৷ আইন লাগু নিয়ে কটাক্ষ সিপিএমের ৷ পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া দিলেন, রাজ্যের সাংবিধানিত প্রধান সিভি আনন্দ বোস ৷ তিনি বলেন, " এই আইনের পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সংমস্যার যৌক্তিক সমাধান ৷ পাশাপাশি, দেশের সুশাসনের প্রতীক ৷"
এদিন কোচবিহারে এক সভা সেরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, "বারবার আমরা বলেছি, এই আইন তৈরি হয়েছে প্র্যাক্টিক্যাল গ্রাউন্ড থেকে ৷ অসংখ্য মানুষ যাঁরা ধর্মীয়ভাবে প্রতারিত হয়ে ভারতবর্ষে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এই আইন ফলপ্রসু হবে ৷ এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন ৷ নাগরিকত্ব এই আইনের মাধ্যমে যাবে না৷"
অন্যদিকে, এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মোদির গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। 1945 সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী; মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। এদিন অপেক্ষার অবসান হল। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের নোটিফিকেশন জারির মাধ্যমে এই আইন কার্যকর হবে গোটা দেশে। ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে স্মরণ করি পূর্ণব্রহ্ম পূর্ণাবতার শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শিবাবতার শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের শ্রীচরণে প্রণাম নিবেদন করি। জয় হরিবোল ৷"
অন্যদিকে, মহম্মদ সেলিম বলেন, "মোদি-মমতার মধ্যে এমনি এমনি দেখা হয়নি ৷ এসব আগে থেকেই ঠিক হয়ে গিয়েছে ৷ বিজেপি বলবে আমি সিএএ নিয়ে আসব আর মমতা বলবে সিএএ করতে দেব না ৷ কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি বারবার হবে না ৷ এই কমেডি মানুষ ধরতে পেরেছে ৷ ভোট ভাগাভাগির জন্য এটা ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ কিন্তু মানুষ সচেতন ৷ সিএএ শুধু বাংলার জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য ৷ তাহলে পাঁচ বছর দেরি করল কেন বিজেপি?" এরপরেই তিনি জানান, আসলে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট পাওয়ার কৌশল এটা ৷
অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, " সিএএ লাগু হবে বলাই হয়েছিল ৷ রুলস রেগুলেশন হওয়া বাকি ছিল ৷ বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে যাঁরা এখানে আসতে বাধ্য হয়েছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে ৷ কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না ৷ মুখ্যমন্ত্রী জানেন কেন করা হয়েছে ৷ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷"