কালনা, 28 নভেম্বর: বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার ইন্দিরা বাজার এলাকায় বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যোগ দিতে আসেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এখানে এসে আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি ৷ এর পাশাপাশি, রাজ্যে সার নিয়ে কালোবাজারি চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি ৷
2024 এর লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে আসন কমার পরে ফের উপনির্বাচনে 6টি আসনে হারের ধাক্কা সামলাতে হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে। শুধু তাই নয়, এই ছটি আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে থাকা মাদারিহাটেও ঘাসফুল ফোটে। এই ফলাফলের পরেই বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের ক্ষোভ প্রকাশ্যে চলে আসে। যদিও বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলছেন উপনির্বাচনে সাধারণত এই ধরনের ফলই হয়ে থাকে। রাজ্যে যে সরকার থাকে, তারাই উপনির্বাচনে জিতে থাকে। ফলে এই ফল নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। বিজেপি নতুন উদ্যোমে তৈরি হচ্ছে 2026 সালে নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে শেষ কথা বলবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ৷ এমনটাই মত দিলীপ ঘোষের।
সার নিয়ে কালোবাজারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সার নিয়ে কালোবাজারি চলছে। কেন্দ্র সরকার তো দাম বেঁধে দিয়েছে। ভর্তুকি দিচ্ছে সারে। কিন্তু, এই রাজ্য সেই সারের কালোবাজারি চলে। আলুর বীজ থেকে সার, সব কিছুতেই দু-নম্বরি হয়। তাই সারের দাম বেড়েছে। এখানে ফুলকপি পনেরো টাকা পিস সেটা কলকাতায় তিরিশ থেকে চল্লিশ টাকা। মুখ্যমন্ত্রী প্রতি বছর টাস্ক ফোর্স গঠন করেন। কিন্তু, সমস্যার সমাধান হয় না। তাদের কোনও কনট্রোল নেই। ফলে চাষিরা সমস্যায় পড়ছেন।"
আবাস যোজনার দুর্নীতির কারণে কেন্দ্র মাঝেমধ্যে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় কেন্দ্র সরকার ৷ সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে দিলীপ ঘোষ বলেন, "আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে সব জায়গায় দুর্নীতি চলছে। 75 লক্ষ বাড়ির মধ্যে অর্ধেক বাড়িও হয়নি। সব টাকা খেয়ে বসে আছে। পার্টির লোকেরা পেয়েছে। সেই কারণে দিল্লি থেকে রিভিউ করার জন্য টিম এসেছে। তাদেরকে মারপিট করে আটকানো হচ্ছে, চুরি যাতে বন্ধ না হয়। তাই মাঝেমধ্যে কেন্দ্র সরকার টাকা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু, টাকা দিলেও সেই টাকা ঠিক জায়গায় পৌঁছাচ্ছে না।"
ইন্দিরা বাজার এলাকায় এসে উপনির্বাচনের ফল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "উপনির্বাচনের ফল এই রকমই হয়ে থাকে। রাজ্যে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই উপনির্বাচনে জয়লাভ করে। এই রাজ্যেও সেটাই হচ্ছে বারবার। তবে লোকসভা নির্বাচনে 39 শতাংশ ভোট পেয়েছি। বিভিন্ন নির্বাচনে ফল বিভিন্ন হয়। কোথাও প্রার্থী নিয়ে সমস্যা, কোথাও অন্যভাবে সমস্যা থাকে। তবে মানুষ আমাদের পাশে আছে। কর্মীরাও আছে। কিছু সংখ্যালঘু ভোট ওদের দিকে গিয়েছে। যদিও এতে হার-জিতের খুব সমস্যা হবে না। বিজেপি নতুন উদ্যোমে কমিটি তৈরি হচ্ছে 2026-এর লড়াইয়ের জন্য। আমরা রাস্তায় নেমেছি। পার্টির কর্মীরাও নেমেছে। লক্ষ্য তো একটা রাখতেই হয়। কতটা এগোনো যায় দেখা যাক।"
উপনির্বাচনে ছয় আসনেই ভরাডুবির পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পরিবর্তে শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য সভাপতি করার জন্য জোরালো সওয়াল করেছেন প্রাক্তন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। বেসুরো গেয়েছেন অগ্নিমিত্রা পল থেকে অর্জুন সিংরাও। তবে দিলীপ ঘোষ বলেন, "দলের যত মেম্বার আছে তাদের পছন্দ থাকতেই পারে কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ঠিক করবেন কে এখানকার সভাপতি হবেন।"