কলকাতা, 6 অগস্ট: সোনার বাংলাদেশ এখন সেনার হাতে। কোটা আন্দোলনের চাপে পড়ে পদত্যাগ এমনকী নিজের দেশ ছাড়তেও বাধ্য হয়েছেন মুজিব কন্যা তথ্যা সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দেশ ছাড়ার পরই পুরো বাংলাদেশজুড়ে 'স্বাধীনতার' উচ্ছ্বাস। প্রায় এক মাস ধরে জারি হওয়া কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশে খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল, হাসপাতাল, অফিস-সহ সর্বত্র'র দরজা। কিন্তু এই মুহূর্তে ভারত থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার সব পথ বন্ধ রাখা হয়েছে। যার ফলে চিন্তায় পড়েছেন বহু ভারতীয় পড়ুয়া।
কলেজ যেতে না-পেরে চিন্তায় মুর্শিদাবাদের ডাক্তারি পড়ুয়ার (ইটিভি ভারত) বহু ভারতীয়ই বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে যায়। তাঁদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা মেডিক্যাল পড়ছেন বাংলাদেশে গিয়ে। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই তাঁদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার। কিন্তু ফিরতে গিয়ে বেশ সমস্যায় তাঁদের পড়তে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতাই তুলে ধরলেন এক ভারতের নাগরিক তথা বাংলাদেশের পড়ুয়া।
মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকলের বাসিন্দা ইজাজ আহমেদ। বর্তমানে তিনি ডাক্তারি পড়ছেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অন্তর্গত মার্ক মেডিক্যাল কলেজ থেকে ৷ পঞ্চম বর্ষের ওই ছাত্রর কথায়, "আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি বাংলাদেশের এই অবস্থা হবে।"
ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই হস্টেলে আশঙ্কায় দিন কাটছিল তাঁদের। প্রথমে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলার সুবিধা থাকলেও পরবর্তীকালে তা বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর কথায়, "আমরা ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে আমাদের প্রিন্সিপাল স্যর এদেশে আসতে সাহায্য করেন। সেনার সহযোগিতায় আমরা বর্ডার পর্যন্ত আসি। তবে রাত হয়ে যাওয়াই ওইদিন বর্ডার পার হতে পারিনি। পরের দিন এদেশের মাটিতে পা-দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি।"
তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও চিন্তা রয়েছে এখনও। তবে ওদেশে গিয়ে নিজের পড়াশোনা আবার শুরু করতে পারবে কি, সেই প্রশ্নই তাঁদের। বলছেন, "আমরা চাইব সেনা প্রধানের হাতে এসে দেশ যেন শান্ত-স্বাভাবিক হয় আবার। দ্রুত আমাদের ওদেশে ফেরানো হোক। পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু আমাদের।" তবে বিদেশি ছাত্র হয়েও তাঁরা বুঝতে পেরেছেন আন্দোলন ছিল, সকল বাংলাদেশের নাগরিকের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।