ব্যান্ডেল, 10 জুন:ভোটের দশ দিন আগে জলের কল লাগানো হয়েছিল । এদিকে ভোট মিটতেই কল খুলে নিতে উপস্থিত হয় মিস্ত্রি । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে ফিরে যায় তারা । এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভোটের আগে বিধায়কের কথায় দীর্ঘদিনের দাবি মতো জলের কল লাগানো হয় ৷ হঠাৎ ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের এই বুথে তৃণমূলের পরাজয় হয় । তাই হারের পরে সোমবার সদ্য লাগানো কল খুলতে চলে এসেছে ৷
ব্যান্ডেল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জলের কল খোলা নিয়ে বিতর্কে সব পক্ষের বক্তব্য (নিজস্ব ভিডিয়ো) বাধার মুখে মিস্ত্রি আপাতত চলে গেলেও আশঙ্কা ফের জল থেকে বঞ্চিত হতে পারে এলাকাবাসী । যদিও এই ঘটনার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৷ এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি । তৃণমূল পঞ্চায়েত সূত্রে দাবি, পঞ্চায়েত থেকে কাউকে পাঠানো হয়নি । এসব অপপ্রচার । বিধায়ক অসিত মজুমদারের দাবি, "এই ঘটনা আমার জানা নেই ৷ কোনও অভিযোগ শুনিনি ৷ বিজেপির কিছু লোকজন এসব কাণ্ড ঘটাচ্ছে ৷" তবে বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেন, "নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই । এটা সামাজিক কাজ । আশঙ্কার কোনও কারণ নেই । পৌরসভার তরফে জলের কল কোনওভাবেই খোলা হবে না বলে আশ্বস্ত করা হচ্ছে ।"
হুগলি লোকসভায় তৃণমূল বিপুল ভোটে জয় লাভ করেছে ৷ কিন্তু চুঁচুড়া বিধানসভায় 8 হাজারের বেশি ভোটে হার হয়েছে । তার মধ্যে ব্যান্ডেল গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু বুথে হার হয়েছে তৃণমূলের । সেখানে ডানলপ ফ্যাক্টারির শ্রমিক মহল্লার বেশ কয়েকটি বুথ আছে । যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই জলের সমস্যা ছিল । ভোটের আগে বিধায়ক ওই এলাকায় প্রচারে গেলে বাসিন্দারা তাঁকে পানীয় জলের কল বসানো জন্য আবেদন জানায় ৷ সেই মতো ভোটের দশদিন আগে বিধায়ক নিজের উদ্যোগে বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার জলের লাইন থেকে একটি পয়েন্টের ব্যবস্থা করে । সেই মতো ডানলপ ফ্যামিলি কোয়ার্টারের এসএম ব্লকে একটি মাত্র পানীয় জলের কল বসানো হয় । এই তীব্র গরমে কিছুটা হলেও জল কষ্ট থেকে স্বস্তি মেলে বাসিন্দাদের । এর ফলে ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের ডানলপ কোয়ার্টারের তিনটি বুথ উপকৃত হয় । এবার আশঙ্কায় দিন গুনছে তারা ।
স্থানীয় বাসিন্দা গোল্ডি সিং বলেন, "আমি একজন প্রতিবন্ধী । বিধায়কের আশ্বাসে জল এসেছিল । ভোট যেতেই কল খুলতে চলে আসছে । আমাদের এখানে জল নেই । বিধায়ককে আমাদের অনুরোধ তৃণমূল তো জিতেছে ৷ আবার ভোট আসবে, কিন্তু আমাদের জল বন্ধ করবেন না । আমরা সমস্যায় পড়ব । উনি আমাদের অভিভাবক ৷ তিনি যদি এরকম করেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব ।"
বিজেপি হুগলি সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, "এটা তৃণমূলের দ্বারাই সম্ভব । ডানলপের মানুষজনের দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের । ভোটের আগে বিধায়ক নিজেই বসিয়েছিলেন জলের কল । এখন ওই জায়গা থেকে বিজেপিকে ভোট দেওয়াতে কল খুলে নেওয়া হচ্ছে । এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক বিষয় ।"