বর্ধমান, 20 ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশ থেকে কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভারতে এসে গ্রেফতার আওয়ামী লীগের নেতা ৷ বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়িতে লুকিয়ে থাকার পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে রাজু আহমেদ নামে এক যুবক । তিনি বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে । রাজুর সঙ্গেই আরও দু’জন গ্রেফতার হয়েছে । পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ ফের এই চক্রে জড়িত সন্দেহে আকাশ দাস নামে আরও এক এজেন্টকে গ্রেফতার করে । ফলে এখনও পর্যন্ত এই চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ ।
বর্ধমান বাংলাদেশিদের জন্য সেফ জোন হয়ে উঠছে ?
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেই অশান্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ । ফলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কিংবা সাধারণ বাংলাদেশি নিজেদের বাঁচাতে সীমান্তবর্তী জেলা দিয়ে এদেশে প্রবেশ করেছে । বৈধ ভিসা-পাসপোর্ট না-থাকায় স্থানীয় এজেন্টকে টাকা দিয়ে এই রাজ্যে ঢুকে পড়ছে তারা । এখানে ফের কাউকে টাকা দিয়ে আশ্রয় খুঁজে নিচ্ছে । এখনও পর্যন্ত বর্ধমান থানার পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে । এর মধ্যে রাজু আহমেদের (32) বাড়ি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার কুরশাপুর গ্রামে । সুদীপ কুমার দাসের (37) বাড়ি আসানসোল দক্ষিণ থানার চাঁদপাড়া গ্রামে । এছাড়া শেখ মাজেদ রহমানের (63) বাড়ি বর্ধমান শহরের বাজেপ্রতাপপুর এলাকার মালিরবাগান এলাকায় । তবে আকাশ দাস আগরতলার নাগেসওয়ারা গ্রামের ঠিকানা দিলেও পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, সেটি তার ঠিকানা নয় । তবে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাজু আহমেদের সঙ্গে আকাশ দাসও বাংলাদেশ থেকে এসে বর্ধমান শহরে আশ্রয় নেয় । প্রায় মাস’দেড়েক আগে তারা দু’জনে বর্ধমানে আসে । রাজু আহমেদ রাজমিস্ত্রীর কাজ করত । অন্যদিকে আকাশ দাস রাজুর জোগানদারের কাজ করত ।

প্রসঙ্গত, অশান্তির আবহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা আছে । বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ । মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি জওয়ান । শুধু তাই নয়, সীমান্ত এলাকায় পুলিশি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে । তবুও উত্তর 24 পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ-বাগদা সীমান্ত দিয়ে এই রাজ্যে ঢুকে পড়ছে তারা । এরপর এজেন্টদের মাধ্যমে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে । শুধু তাই নয়, টাকার বিনিময়ে আশ্রয়ও পেয়ে যাচ্ছে । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কেউ প্রাণভয়ে কিংবা রুটিরুজির সন্ধানে এদেশে আশ্রয় নিচ্ছে ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে সব জায়গায় জানানো হয়েছে, বাইরে থেকে কেউ ভাড়া নিয়ে থাকতে এলে যেন স্থানীয় থানায় জানানো হয় । জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করার জন্য যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে । কী উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এখানে আশ্রয় নিয়েছিল সব খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।’’