ETV Bharat / state

অবনীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙায় ক্ষুব্ধ ঠাকুর-সেন পরিবার, তালা ঝুলিয়ে কাজ রুখল পুরসভা - ABANINDRANATH TAGORE HOUSE

অবন ঠাকুরের বাড়ি প্রায় ভাঙা সম্পূর্ণ ৷ তবুও যতটুকু অবশিষ্ট আছে তা বাঁচিয়ে রাখতে কাজ বন্ধ করেছে পুরসভা ৷ ঐতিহ্যবাহী বাড়ি ভাঙায় ক্ষুব্ধ সকলে ৷

ABANINDRANATH TAGORE HOUSE DEMOLISHED
ভাঙার কাজ বন্ধ করে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে বোলপুর পুরসভা (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 20, 2025, 8:49 PM IST

বোলপুর, 20 ফেব্রুয়ারি: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় উত্তাল শান্তিনিকেতন । এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ঠাকুর ও নোবেলজয়ীর সেন পরিবারের সদস্য-সহ প্রবীণ আশ্রমিকরা ৷ বাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করল বোলপুর পৌরসভা ৷ সাংবাদিক বৈঠক করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানালেন বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ । তবে ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি আর প্রায় নেই বললেই চলে ৷ এই ভাবেই শান্তিনিকেতনে একের পর এক ঐতিহ্য শেষ হচ্ছে, আক্ষেপ সকলের ৷

নিজ দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ বলেন, "আমরা এই বাড়িভাঙার বিষয়ে কেউ কিছু জানতামই না ৷ সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেই আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি ৷ তদন্ত শুরু করেছি । খতিয়ে দেখা হচ্ছে কে বা কারা ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি ভেঙেছে ৷ ঐতিহ্য ও রবীন্দ্র স্মৃতি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বোলপুর পৌরসভা ।"

অবনীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙা নিয়ে শান্তিনিকেতনের গুণীজন ও বোলপুর পুরসভার বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী তথা লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসত বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছিল ৷ প্রায় 1 বিঘা জায়গার উপর গাছে ঘেরা ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত 'আবাস' বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ হলেও এখন ইট, রড বেরিয়ে অর্ধেকের বেশি ভগ্নপ্রায় হয়ে পড়ে রয়েছে ।

প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিশ্বভারতীর প্রথম আচার্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । 1941 সালে কবির প্রয়াণের পর 1942 সালে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় আচার্য হন তাঁর ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ সেই সময় এই বাড়িতে বাস করতেন তিনি ৷ তাঁর নামানুসারেই এই এলাকার নামকরণ হয় 'অবনপল্লী'। একদা বহু বিশিষ্ট মানুষজনের পদধূলি পড়েছিল বাড়িটিতে ৷ এমন একটি স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ শান্তিনিকেতনবাসী ৷

ABANINDRANATH TAGORE HOUSE DEMOLISHED
অবন ঠাকুরের বাড়ির গেটে ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে পুরসভা (ইটিভি ভারত)

এই নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার থেকে অমর্ত্য সেনের পরিবারের সদস্যরা ৷ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবীণ আশ্রমিকেরাও ৷ সকলের বক্তব্য একটাই, এক এক করে শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে ৷ তাতেই হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি । প্রশাসনের এই বিষয়গুলিতে নজর দেওয়া উচিত ৷ কারণ, গুরুদেবের শান্তিনিকেতনে তাঁরই ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি এভাবে ভেঙে দেওয়ার ঘটনা কেউই মেনে নিতে পারছেন না ৷ জানা গিয়েছে, বাড়িটি ছিল প্রায় 1 বিঘা জায়গায় । এই জায়গা প্লট করে 8 জনকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ৷ বহু বড় বড় গাছও কেটে ফেলা হয়েছে । এই প্লটগুলিতে কটেজ হওয়ার কথা ৷

এই ভাবেই গত দুই দশক ধরে জমি মাফিয়াদের দখলে চলে যাচ্ছে বোলপুর-শান্তিনিকেতন । প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে প্রশাসনের নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল আবাসন, কটেজ, হোটেল, রেস্তোরাঁ, লজ, বহুতল প্রভৃতি । যা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের ৷ এই অভিযোগ বহু ৷ 'আমাদের ছোট নদী' কোপাইয়ের পাড় ও নদীগর্ভ দখল করে নির্মাণ, আদিবাসীদের জমি দখল করে নির্মাণ প্রভৃতির একাধিক অভিযোগের পরেও নির্বিকার প্রশাসন ।

তবে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙায় চর্তুদিকে নিন্দার ঝড় উঠতেই আসরে নামে বোলপুর পৌরসভা । পৌরসভার পক্ষ থেকে ভাঙার বাকিটুকু কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ির গেটে । এমনকি, কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ তবে সকলের মত, আরও আগে প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হত ৷ তাহলে বেঁচে যেত স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ৷

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙা নিয়ে শান্তিনিকেতনবাসী গুণীজনদের মতামত:

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির প্রতিবেশী তথা বিশ্বভারতীর পাঠভবনের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, "শুনে ভালো লাগল বোলপুর পৌরসভা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ৷ তবে আরও আগে করলে এতটা ভাঙা হত না ৷ আমাদের মত শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদেরও উচিত এলাকার ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলি রক্ষা করা ৷ এই ধরনের ঘটনা জানতে পারলেই সকলকে দ্রুত জানানো । পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা ।"

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, "বিশ্বভারতীতে এখন সবই ভেঙে দেওয়া হচ্ছে । নতুন করে গড়ার ক্ষমতা নেই কারও । অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িটা ভেঙে দেওয়া ঠিক হয়নি ৷ যাকে বিক্রি করেছেন তিনিও বাড়িটির মূল্য বোঝেননি ৷ ভেঙে দিয়েছে । এটা খুব অন্যায় হয়েছে । প্রশাসনের আরও আগে দেখা উচিত ছিল ।"

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ভাই শান্তভানু সেনের কথায়, "কত দিনের পুরনো বাড়ি ৷ সেই ছোটবেলা থেকে দেখেছি ৷ এর একটা ইতিহাস আছে । শান্তিনিকেতনবাসীর পথে নামা উচিত ৷ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল ৷ এটা ঠিক হয়নি ।"

আশ্রমিক সুলগ্না মুখোপাধ্যায় বলেন, "শুধুমাত্র ওই বাড়িটাই না, শান্তিনিকেতনে ইন্দিরা দেবী চৌধুরানির কোয়ার্টারও ভেঙে দেওয়া হয়েছে । প্রশাসনকে এটুকুই বলব ওনারা এগুলি দেখুন ৷ শান্তিনিকেতনে যেভাবে বাড়ি বিক্রি হচ্ছে, প্রশাসন সেদিকে নজর দিক ৷ তবেই ভবিষ্যতে শান্তিনিকেতনের সীমানাটুকু উপকৃত হতে পারে । প্রশাসনের হস্তক্ষেপ খুব জরুরি ।"

শান্তিনিকেতনে আরেক প্রবীণ আশ্রমিক তথা অধ্যাপক কল্পিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, "অত্যন্ত আক্ষেপের । শান্তিনিকেতনে আস্তে আস্তে পুরনো সব জিনিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে । অবনীন্দ্রনাথ নিজে এই বাড়িতে থেকেছেন ৷ এলাকাটা তাঁর নামে অবনপল্লী ৷ এমনটা ঐতিহ্যময় বাড়ি ভেঙে দেওয়া, খুব কষ্ট হল যখন শুনলাম বাড়িটা ভাঙা হচ্ছে ৷ প্রশাসনের এগুলি দেখা উচিত ৷ মানুষজনকেও সচেতন হওয়া উচিত ৷ বাড়ির ইট কাঠের তো আর কোনও মূল্য থাকে না, কিন্তু সেখানে যাঁরা বাস করেন তাঁদের মূল্যে বাড়ির মূল্য ৷"

বোলপুর, 20 ফেব্রুয়ারি: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় উত্তাল শান্তিনিকেতন । এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ঠাকুর ও নোবেলজয়ীর সেন পরিবারের সদস্য-সহ প্রবীণ আশ্রমিকরা ৷ বাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করল বোলপুর পৌরসভা ৷ সাংবাদিক বৈঠক করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানালেন বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ । তবে ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি আর প্রায় নেই বললেই চলে ৷ এই ভাবেই শান্তিনিকেতনে একের পর এক ঐতিহ্য শেষ হচ্ছে, আক্ষেপ সকলের ৷

নিজ দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ বলেন, "আমরা এই বাড়িভাঙার বিষয়ে কেউ কিছু জানতামই না ৷ সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেই আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি ৷ তদন্ত শুরু করেছি । খতিয়ে দেখা হচ্ছে কে বা কারা ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি ভেঙেছে ৷ ঐতিহ্য ও রবীন্দ্র স্মৃতি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বোলপুর পৌরসভা ।"

অবনীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙা নিয়ে শান্তিনিকেতনের গুণীজন ও বোলপুর পুরসভার বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী তথা লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসত বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছিল ৷ প্রায় 1 বিঘা জায়গার উপর গাছে ঘেরা ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত 'আবাস' বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ হলেও এখন ইট, রড বেরিয়ে অর্ধেকের বেশি ভগ্নপ্রায় হয়ে পড়ে রয়েছে ।

প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিশ্বভারতীর প্রথম আচার্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । 1941 সালে কবির প্রয়াণের পর 1942 সালে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় আচার্য হন তাঁর ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ সেই সময় এই বাড়িতে বাস করতেন তিনি ৷ তাঁর নামানুসারেই এই এলাকার নামকরণ হয় 'অবনপল্লী'। একদা বহু বিশিষ্ট মানুষজনের পদধূলি পড়েছিল বাড়িটিতে ৷ এমন একটি স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ শান্তিনিকেতনবাসী ৷

ABANINDRANATH TAGORE HOUSE DEMOLISHED
অবন ঠাকুরের বাড়ির গেটে ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে পুরসভা (ইটিভি ভারত)

এই নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার থেকে অমর্ত্য সেনের পরিবারের সদস্যরা ৷ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবীণ আশ্রমিকেরাও ৷ সকলের বক্তব্য একটাই, এক এক করে শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে ৷ তাতেই হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি । প্রশাসনের এই বিষয়গুলিতে নজর দেওয়া উচিত ৷ কারণ, গুরুদেবের শান্তিনিকেতনে তাঁরই ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি এভাবে ভেঙে দেওয়ার ঘটনা কেউই মেনে নিতে পারছেন না ৷ জানা গিয়েছে, বাড়িটি ছিল প্রায় 1 বিঘা জায়গায় । এই জায়গা প্লট করে 8 জনকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ৷ বহু বড় বড় গাছও কেটে ফেলা হয়েছে । এই প্লটগুলিতে কটেজ হওয়ার কথা ৷

এই ভাবেই গত দুই দশক ধরে জমি মাফিয়াদের দখলে চলে যাচ্ছে বোলপুর-শান্তিনিকেতন । প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে প্রশাসনের নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করেই গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল আবাসন, কটেজ, হোটেল, রেস্তোরাঁ, লজ, বহুতল প্রভৃতি । যা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের ৷ এই অভিযোগ বহু ৷ 'আমাদের ছোট নদী' কোপাইয়ের পাড় ও নদীগর্ভ দখল করে নির্মাণ, আদিবাসীদের জমি দখল করে নির্মাণ প্রভৃতির একাধিক অভিযোগের পরেও নির্বিকার প্রশাসন ।

তবে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙায় চর্তুদিকে নিন্দার ঝড় উঠতেই আসরে নামে বোলপুর পৌরসভা । পৌরসভার পক্ষ থেকে ভাঙার বাকিটুকু কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ির গেটে । এমনকি, কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ তবে সকলের মত, আরও আগে প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হত ৷ তাহলে বেঁচে যেত স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ৷

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙা নিয়ে শান্তিনিকেতনবাসী গুণীজনদের মতামত:

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির প্রতিবেশী তথা বিশ্বভারতীর পাঠভবনের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, "শুনে ভালো লাগল বোলপুর পৌরসভা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ৷ তবে আরও আগে করলে এতটা ভাঙা হত না ৷ আমাদের মত শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদেরও উচিত এলাকার ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলি রক্ষা করা ৷ এই ধরনের ঘটনা জানতে পারলেই সকলকে দ্রুত জানানো । পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা ।"

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, "বিশ্বভারতীতে এখন সবই ভেঙে দেওয়া হচ্ছে । নতুন করে গড়ার ক্ষমতা নেই কারও । অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িটা ভেঙে দেওয়া ঠিক হয়নি ৷ যাকে বিক্রি করেছেন তিনিও বাড়িটির মূল্য বোঝেননি ৷ ভেঙে দিয়েছে । এটা খুব অন্যায় হয়েছে । প্রশাসনের আরও আগে দেখা উচিত ছিল ।"

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ভাই শান্তভানু সেনের কথায়, "কত দিনের পুরনো বাড়ি ৷ সেই ছোটবেলা থেকে দেখেছি ৷ এর একটা ইতিহাস আছে । শান্তিনিকেতনবাসীর পথে নামা উচিত ৷ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল ৷ এটা ঠিক হয়নি ।"

আশ্রমিক সুলগ্না মুখোপাধ্যায় বলেন, "শুধুমাত্র ওই বাড়িটাই না, শান্তিনিকেতনে ইন্দিরা দেবী চৌধুরানির কোয়ার্টারও ভেঙে দেওয়া হয়েছে । প্রশাসনকে এটুকুই বলব ওনারা এগুলি দেখুন ৷ শান্তিনিকেতনে যেভাবে বাড়ি বিক্রি হচ্ছে, প্রশাসন সেদিকে নজর দিক ৷ তবেই ভবিষ্যতে শান্তিনিকেতনের সীমানাটুকু উপকৃত হতে পারে । প্রশাসনের হস্তক্ষেপ খুব জরুরি ।"

শান্তিনিকেতনে আরেক প্রবীণ আশ্রমিক তথা অধ্যাপক কল্পিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, "অত্যন্ত আক্ষেপের । শান্তিনিকেতনে আস্তে আস্তে পুরনো সব জিনিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে । অবনীন্দ্রনাথ নিজে এই বাড়িতে থেকেছেন ৷ এলাকাটা তাঁর নামে অবনপল্লী ৷ এমনটা ঐতিহ্যময় বাড়ি ভেঙে দেওয়া, খুব কষ্ট হল যখন শুনলাম বাড়িটা ভাঙা হচ্ছে ৷ প্রশাসনের এগুলি দেখা উচিত ৷ মানুষজনকেও সচেতন হওয়া উচিত ৷ বাড়ির ইট কাঠের তো আর কোনও মূল্য থাকে না, কিন্তু সেখানে যাঁরা বাস করেন তাঁদের মূল্যে বাড়ির মূল্য ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.