কলকাতা, 26 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামিকাল নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজের একাংশ । কিন্তু সেই নবান্ন অভিযানে যোগ দিচ্ছে না চারটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই, এআইএসএফ, পিএসইউ ও এআইএসবি । উপরন্তু এই নবান্ন অভিযানকে 'মুখোশধারীদের অভিযান' বলে কটাক্ষ করেছে তারা ৷
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দেবের বক্তব্য (ইটিভি ভারত) পাশাপাশি রাজ্যের বৃহৎ অংশের ছাত্র সমাজকে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সিপিএম ছাত্র সংগঠনের নেতারা । তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, "27 অগস্ট নবান্ন অভিযানকে আমরা কোনও ভাবেই সমর্থন করি না । কারণ, এটা বিজেপি দ্বারা গঠিত কর্মসূচি । শুধু তাই নয়, আগামিকাল ইউজিসি নেটের পরীক্ষাও আছে ।"
সোমবার এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দেব বলেন, "কে বা কারা নেট পরীক্ষার দিনে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে তা আমরা স্পষ্ট করে জানি না । তবে, সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়া থেকে বিভিন্ন খবরের ভিত্তিতে স্পষ্ট, কিছু প্রাক্তন তৃণমূল নেতা এবং কিছু বর্তমান বিজেপি নেতার নেতৃত্বে 'মুখোশধারী ছাত্র সমাজে'র একাংশ এই অভিযানের ডাক দিয়েছে । যারা হাথরস, কাঠুয়া-সহ একাধিক ঘটনার বিষয়ে পথে নামেনি, তাদের থেকে এ ধরনের আন্দোলন গ্রহণযোগ্য নয় । বরং, সাধারণ মানুষ ও ছাত্রসমাজ তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু করেছে তাকে বিপথে চালিত করতেই এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । বাংলার ছাত্রসমাজ এই অভিযানে থাকবে না ।"
সম্প্রতি বিকাশ ভবনের তরফে থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে, স্কুল পড়ুয়াদের প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় । সেই 'স্বৈরাচারের সার্কুলা'র মানছে না বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি । এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কাৰ্য্যী বলেন, "আমরা এই সময়কালে দেখছি শাসকদলের বিভিন্ন সভা সমিতিতে ভিড় বাড়ানোর জন্য ক্লাসরুম বন্ধ রেখে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার ঘটনা । অথচ বাংলার চিকিৎসক ছাত্রীর নৃশংস বর্বরোচিত খুন ও ধর্ষণের ঘটনার বিচার চেয়ে স্কুল পড়ুয়ারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে গর্জে উঠতে চাইলে সরকারি নির্দেশ জারি করে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে । এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় পরাধীন ভারতের মুক্তিকামী ছাত্রসমাজকে দমিয়ে রাখার জন্য ব্রিটিশ সরকারের জারি করা সার্কুলারের কথা ।"
তাঁর কথায়, "আমরা কড়া ভাষায় ওই নির্দেশিকার নিন্দা করছি । এই সরকারি প্রয়াস আসলে ন্যায্য বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমন করার স্বৈরাচারী কৌশল । আমরা রাজ্যের সমস্ত প্রান্তের স্কুলপড়ুয়ার কাছে আহ্বান করছি আন্দোলনকে চলমান রেখে রাজপথে থাকতে । ক্লাসরুমের দখল নিজেদের হাতে নিয়ে বাংলার ছাত্রীর বিচারের দাবিতে লড়াই আরও মজবুত করতে । যে যেখানে যেভাবে পারো ছাত্রছাত্রীদের সংগঠিত করে লড়াই চালিয়ে যাও । আমরা রাজ্যজুড়ে স্কুল পড়ুয়াদের এই সমস্ত লড়াই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি ।"