কলকাতা, 8 মে: তীব্র দহনজ্বালা জুড়িয়ে দিয়েছে সপ্তাহের প্রথম দিনের সন্ধ্যায় নামা বৃষ্টি ৷ তবে সেই ঘণ্টা দুয়েকের ঝড়-বৃষ্টির দাপটে শহরে ফিকে হওয়া সবুজে ফের ক্ষত দেখা দিল ৷ এই ঝড়ে তুলো, কদম, কৃষ্ণচূড়া, বট, দেবদারু ও আম মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রায় 120টিরও বেশি বড় গাছ উপড়ে গিয়েছে ৷ মহানগরের সবুজ যখন কমতে কমতে তলানিতে, তখন এমন ঘটনা কার্যত চিন্তায় ফেলেছে কলকাতা পৌরনিগমের উদ্যান বিভাগের কর্তাদের ৷
সোমবারের কালবৈশাখীর ঝড়জলের দাপটে মহানগরের বেশ কিছু এলাকা বিচ্ছিন্নভাবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ৷ ঘণ্টায় হাওয়ার দাপট ছিল 77 কিলোমিটার ৷ আর তার জেরেই কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় 120টিরও বেশি পূর্ণবয়স্ক গাছ পড়ে গিয়েছে ৷ তবে সবচেয়ে বেশি গাছ উপড়ে যাওয়ার তালিকায় প্রথম স্থানে বরো 7 এবং দ্বিতীয় বরো 3 ৷
কেন এমন অবস্থা ? এই বিষয়ে কলকাতা পৌরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "শহরে গাছগুলি মাথায় যত বাড়ে শিকড় ততটা গভীর নয় ৷ চারদিকে ছড়াতে পারে না ৷ আবার বিভিন্ন পরিষেবার জন্য যখন ফুটপাত বা রাস্তা কাটা হয়, কাজ হয় সেক্ষেত্রে সচেতন না হয়েই শিকড় কেটে দেওয়া হয় ৷ ফলে গোড়া আলগা হয়ে যায় । তা উপর থেকে বোঝা যায় না ৷ কিন্তু এমন ঝড়জলের সময় মুহূর্তে উপড়ে যায় ৷ তাই আমরা যে সব গাছ নতুন করে রোপণ করছি, সেগুলি হয় কম উচ্চতার, আর না হলে গভীরে যাবে ।"
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও অরণ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে 2011 থেকে 2021 পর্যন্ত দশ বছরে প্রায় 30 শতাংশ সবুজ কমেছে তিলোত্তমায় ৷ তার উপর সামান্য কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে এই অবস্থা । সবুজ যেমন কমছে, তেমনই বিকল্প সবুজায়ন করার কথা পরিকল্পনা করছে কলকাতা পৌরনিগম ৷ তবে এইভাবে গাছ কমতে থাকলে আগামী 50 বছরের মধ্যে শহরের অবস্থা খুব খারাপ হবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
আরও পড়ুন :
- কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে প্রাচীন গাছগুলি কাটা হচ্ছে নির্বিচারে, সরব ঠাকুর পরিবার
- ধ্বংস নয়, প্রাণ সঞ্চারকারী 'বোমা' বানাচ্ছেন ওরা
- গাছ লাগানোর জায়গা চাই, সেনা থেকে বন্দর ও হাওড়া কর্পোরেশনকে বৈঠকে ডাক মন্ত্রীর