পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সাগর দত্তে আজই শুরু 250টি সিসিটিভি বসানোর কাজ, বৈঠক শেষে জানালেন স্বাস্থ্যসচিব - Sagore Dutta Medical College Attack

Sagore Dutta Medical College Attack: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনায় কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক সেরে বেরিয়ে গিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ৷ তবে, তাঁদের বেরিয়ে যাওয়ার পর, ফের জুনিয়র ডাক্তারদের ঘিরে ধরার অভিযোগ উঠল মৃত রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৷ যেখানে পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলেও, নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে ৷

Sagore Dutta Medical College Attack
সাগর দত্তে আজই শুরু 250টি সিসিটিভি বসানোর কাজ ৷ (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 28, 2024, 9:04 PM IST

Updated : Sep 28, 2024, 9:18 PM IST

কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: আজ থেকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে 250টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে ৷ হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম ৷ সেই সঙ্গে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করার কথাও জানিয়েছেন তিনি ৷ তবে, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা বেরিয়ে যেতেই, ফের জুনিয়র ডাক্তারদের ঘিরে ধরার অভিযোগ উঠল রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ তুললেন, জুনিয়র ডাক্তারই মেরেছেন তাঁদের মেয়েকে ৷ যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর ৷ আর এবারেও হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠল ৷

শুক্রবার রাতে সাগর দত্ত হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের ঘটনার পর, আজ দুপুরে তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরা সেখানে পৌঁছান ৷ হাসপাতাল সুপারের ঘরে জুরুরি বৈঠক শুরু হয় ৷ উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, বিশেষ স্বাস্থ্যসচিব শুভাঞ্জন দাস, ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা অনিরুদ্ধ নিয়োগী এবং ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বপন সোরেন ৷ ছিলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া ৷ জুনিয়র ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে ছিলেন ৷

সাগর দত্তে আজই শুরু 250টি সিসিটিভি বসানোর কাজ ৷ (ইটিভি ভারত)

বৈঠক থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, "আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জুনিয়র ডাক্তার, রেসিডেন্ট চিকিৎসক, নার্স সবার সঙ্গে কথা বলেছি ৷ নিরাপত্তার বিষয়টা এখানে বড় ইস্যু ছিল ৷ সেটা মেটাতে কথা হয়েছে ৷ বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে ৷ এর পাশাপাশি, আজকেই আড়াইশোর বেশি সিসিটিভি লাগানোর কাজ শুরু হচ্ছে ৷" উল্লেখ্য, এ দিন জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে সিসিটিভির বিষয়টি তোলা হয়েছিল কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে ৷ জুনিয়র ডাক্তাররা প্রশ্ন তোলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর 12 দিন পেরিয়ে গেলেও, কেন সিসিটিভি বসল না? যার জবাবে, সুপার জানান 360 টি সিসিটিভি বসার কথা। কিন্তু, স্বাস্থ্য ভবন থেকে মাত্র 40টির টেন্ডার পাশ হয়েছে । ফলে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির মাত্র দু'দিন আগেও যে রাজ্যে সরকারি হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা বেহাল, সাগর দত্তের পরিস্থিতি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলে দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।

প্রশ্ন উঠছে, একটি বৈঠকের পরেই আড়াইশোর বেশি সিসিটিভি লাগানোর কাজ যদি শুরু হতে পারে, তাহলে তা আগে হয়নি কেন ? অন্যদিকে, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের কথা চিন্তা করে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্যসচিব ৷ এ দিনের বৈঠক শেষে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, "ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ আমরা পেয়ে গিয়েছি ৷ যাঁরা হামলা চালিয়েছে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে ৷ আইন অনুযায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস আমি দিচ্ছি ৷" নিরাপত্তার বিষয়টি কালেক্টিভ ম্যাটার বলে এড়িয়ে যান তিনি ৷

জুনিয়র ডাক্তারদের ঘিরে ধরার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ৷ (নিজস্ব চিত্র)

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য আধিকারিকরা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতেই সাগর দত্ত মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের ঘিরে ধরার অভিযোগ উঠেছে মৃত রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে ৷ সেখানে মৃতের মা এবং পরিবারের কয়েকজন ছিলেন ৷ তাঁরা অভিযোগ করতে থাকেন, হাসপাতালের ডাক্তাররা তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলেছেন ৷ সেই সময় অনেকে মিলে জুনিয়র ডাক্তারদের ঘিরেও ধরেন ৷ অভিযোগ, সেখানে পরিবারের লোকজন ছাড়াও, বহিরাগতরা ছিল ৷

সাগর দত্ত মেডিক্যালের অবস্থান মঞ্চে জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের নেতৃত্ব ৷ (নিজস্ব চিত্র)

এই পরিস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের কাছে সাহায্য চান ৷ কিন্তু, পুলিশ কর্মীরা নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় রোগীর পরিবারের সদস্যদের ৷ ভিড়ের মধ্যে থেকে কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তারদের দিকে তেড়ে আসেন বলে অভিযোগ ৷

বারাবার হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত সাগর দত্ত মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ (নিজস্ব চিত্র)

এ নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের সদস্য কিঞ্জল নন্দ প্রশাসনের নিরাপত্তা দেওয়ার ইচ্ছে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তিনি বলেন, "একটা হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা এবং কোনও ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার মধ্যে ফারাক আছে ৷ কিন্তু, সরকারের সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার সদিচ্ছা আমরা দেখছি না ৷ আর যদি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না-হয়, তাহলে আবারও আমাদের কর্মবিরতিতে যেতে হতে পারে ৷"

Last Updated : Sep 28, 2024, 9:18 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details