পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

আবাস যোজনার তালিকায় 'ভূতুড়ে' উপভোক্তার নাম পাঁচবার ! বিতর্ক কাটোয়ায় - AWAS YOJANA SCAM

আবাস যোজনার দুর্নীতিতে এবা নয়া সংযোজন ৷ 'অস্তিত্ববিহীন' উপভোক্তার হদিশ পেলেন ব্লক আধিকারিকরা ৷ আর একবার নয়, বরং সেই উপভোক্তার নাম তালিকায় পাঁচবার ৷

AWAS YOJANA SCAM
আবাস যোজনার তালিকায় ভুয়ো উপভোক্তার নাম পাঁচবার তোলার অভিযোগ ৷ (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 8, 2024, 8:23 PM IST

কাটোয়া, 8 নভেম্বর: সুদেষ্ণা রায়, কাটোয়া 2 নম্বর ব্লকের জগদানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ৷ আর আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর নাম এসেছে পাঁচবার ! কিন্তু, আরও বড় কেলেঙ্কারি সামনে এল এবার ৷ যখন সরকারি আধিকারিকরা সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখলেন, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে সুদেষ্ণা রায় নামে কোনও মহিলার অস্তিত্বই নেই ৷ আর এতেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, আবাস যোজনার টাকা লুট করতে কি এবার 'ভূতুড়ে' উপভোক্তা তৈরি করা হচ্ছে ?

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিকায় যে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে, তার সমাধান করা হবে ৷ তালিকা খতিয়ে দেখে, সমস্ত ভুয়ো নাম যোগ হয়েছে ৷ সেই সমস্ত নাম বাতিল করা হবে ৷ আবাস যোজনার তালিকায় দুর্নীতি হচ্ছে ৷ এই অভিযোগ তুলে অনেকবার সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷ সিপিএম-বিজেপির অভিযোগ, আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা তালিকায় ভুয়ো নাম যোগ করেছে ৷ এছাড়া, যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, তাঁদের নামও তালিকায় রয়েছে ৷

আবাস যোজনার তালিকায় পাঁচবার একই উপভোক্তার নাম ৷ (নিজস্ব চিত্র)

সিপিএম নেতা মাধাই ঘোষ বলেন, "শুধু সুদেষ্ণা রায় নয়, এইভাবে গোটা অঞ্চলে ভুলেভরা তালিকা আছে ৷ শাসকদলের একাধিক ব্যক্তির নাম তালিকায় আছে ৷ কাটোয়া-2 ব্লকের বিডিও-কে সেই তালিকা দেখে ভুয়ো নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি ৷ যাঁরা প্রকৃত গরিব মানুষ, তাঁদের নাম সেই আবাস যোজনার তালিকায় নেই ৷ এরপরেও যদি দেখা যায়, দুর্নীতি বন্ধ হয়নি ৷ তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷"

বিজেপি নেত্রী সীমা ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের ঝোলা থেকে একের পর এক দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে ৷ ওরা এখন বলছে সরকারি কর্মচারীদের ভুলের কারণেই তালিকায় গরমিল হয়েছে ৷ সেটা নয়, ওরা ইচ্ছাকৃতভাবেই নিজেদের লোকেদের নাম আবাস যোজনার তালিকায় তুলে দিয়েছে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তালিকায় সঠিক নাম থাকলেই আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হবে ৷ কিন্তু, আজ পর্যন্ত সঠিকভাবে তালিকায় তাঁরা কোনও নাম তোলেনি ৷ আবাস যোজনার বাড়ি প্রতি তৃণমূল 20 হাজার টাকা করে তুলছে ৷ ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলাবাজি চলছে এই আবাস যোজনার বাড়ি থেকে ৷ তাই ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে দিয়ে তারা টাকা তোলার কারবার ফেঁদেছে ৷ সুদেষ্ণা রায় নামে এই পঞ্চায়েতে কাউকে পাওয়াই যায়নি ৷"

জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, "প্রশাসনিক ব্যাপার এটা ৷ কোথাও কোনও ভুল হয়ে থাকলে, সেটা শুধরে নেবে প্রশাসন ৷ এখানে দুর্নীতি, কিংবা কাউকে পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপার নেই ৷ তৃণমূল কংগ্রেস তথা রাজ্য সরকার চায় সব মানুষ বাড়ি পাক ৷ এইভাবেই ঘর বিলি হবে ৷ কারও নামে ভুলবশত বাড়ি এলে সেই নাম বাতিল হবে ৷ যাঁরা পাওয়ার যোগ্য, তাঁরাই বাড়ি পাবেন ৷"

তাঁর যুক্তি, "আবাস যোজনার বাড়ির জন্য যাঁরা দরখাস্ত করেছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কয়েক বছর আগে আবেদন করেছেন ৷ সেই সময় অনেকের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল ৷ ফলে আজ অনেকের অবস্থা কিছুটা হলেও ফিরেছে ৷ সেই সব মানুষের নাম বাদ যাবে ৷ দুর্নীতি হোক আমরাও যেমন চাই না, তেমনি সরকারও সেটা চায় না ৷ প্রশাসন একটা নিদিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে এই ঘর বিলি করছে ৷ ভুল হতে পারে ৷ কিন্তু, দুর্নীতির কোন সম্ভাবনা নেই ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details