নিশীথ প্রামাণিকের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক পরিচয় পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে 20 লক্ষেরও বেশি টাকার প্রতারণার অভিযোগ ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা বিশ্বনাথ শীলের ৷
জলপাইগুড়ি, 4 অক্টোবর: চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের আপ্তসহায়কের পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৷ অভিযুক্ত পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে এই মর্মে ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা বিশ্বনাথ শীল ৷
অভিযোগ, বিশ্বনাথ-সহ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণা করেছেন নিশীথ প্রামাণিকের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক পরিমল রায় ৷ প্রায় 17 লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি ৷ তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 316(2) ও 318(4) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ৷
তবে কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের দাবি, পরিমল রায় তাঁর আপ্তসহায়ক ছিলেন না ৷ তিনি বলেন, "পরিমল রায় নামে আমার কোনও কর্মী ছিল না। অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, তারা ছবিও তোলেন ৷ কেউ আমার নাম করে টাকা তুলবে, সেই জন্য আমি দায়ী নই।" আর অভিযুক্ত পরিমল রায়ের ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিণ মাধবডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ শীল আগে মেখলিগঞ্জের উছলপুকুরিতে থাকতেন ৷ 2014 সালে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি ৷ 2016 সালে মেখলিগঞ্জের বিজেপির মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব পান ৷ তিনি জানান, 2019 সালের পর তৎকালীন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় ৷
তাঁর অভিযোগ, "বিজেপির তৎকালীন সাংসদ দিল্লিতে চাকরির ব্যাবস্থা করে দিতে রাজি হন । কিন্তু বাড়ি থেকে অনেকটাই দূর বলে আমরা সেই প্রস্তাবে রাজি হইনি । সেই ঘটনার দিন সাতেক পর সিতাই ব্লকের উত্তর সিঙ্গিমারির বাসিন্দা পরিমল রায় নিশিথ প্রামাণিকের আপ্তসহায়ক বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করেন । কালিরহাট এলাকায় এসে আমার সঙ্গে দেখাও করেন । চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেন ৷"
নিশীথ প্রামাণিকের পিএ-র বিরুদ্ধে মামলা বিজেপি নেতার (নিজস্ব চিত্র)
অভিযোগকারী আরও জানান, চাকরি পাওয়ার আশায় এরপর তাঁর পরিবার ও গ্রামের কয়েকজন পরিমল রায়কে কয়েক দফায় 20 লক্ষেরও বেশি টাকা দেন ৷ এরমধ্যে 17 লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেওয়া হয় অভিযুক্তকে ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত কারও চাকরি হয়নি ৷ একাধিকবার টাকা ফেরৎ চাওয়া হলেও কোনও লাভ হয়নি ৷ এরপর বিশ্বনাথ শীল নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে বাকিদের টাকা ফেরৎ দেন ৷ কালীপুজোর আগের দিন পরিমল রায় তাঁর মাকে নিয়ে বিশ্বনাথের বাড়ি আসেন ৷ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন ৷ বিশ্বনাথ শীলের দাবি, "তাঁর মাকে আমার বাড়িতে রেখে পালিয়ে গিয়েছেন ৷ ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না তাঁকে ৷ শনিবার তাই বাধ্য হয়ে ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলাম ৷ এতদিন টাকা ফেরৎ পাব ভেবে চুপ করেছিলাম ৷"
ঘটনাপ্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ বলেন, "ময়নাগুড়ি থানার প্রাক্তন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের আপ্তসহায়কের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে । অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"