কলকাতা, 11 জুলাই: তৃতীয়বারের নোটিশের পর অবশেষে নড়েচড়ে বসল খাদ্য দফতর । এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে জমা পড়ল রেশন কার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ৷ জানা গিয়েছে, মোট এক হাজার পাতার নথিপত্র সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছে খাদ্য দফতর। এর মধ্যে রয়েছে 2014 থেকে 2024 সাল পর্যন্ত রাজ্যে বাতিল হওয়া সকল রেশন কার্ডের তথ্য ৷
ইডি সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, রাজ্যে বাতিল হয়ে যাওয়া কার্ডে এখনও রেশন তোলা হচ্ছে ৷ আর এই কাজ করছেন সমাজের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ৷ তারা বাতিল কার্ড দিয়ে যাবতীয় রেশন তুলে সেইগুলি বাইরে পাচার করছে। সেই রেশন পাচারের পরিমাণটা কত? এই বিষয়ে ঠিকঠাক হিসেব পাওয়ার জন্যই এবার রাজ্যের রেশন কার্ডের তালিকা মিলিয়ে দেখতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তার জন্য খাদ্য দফতরের কাছে বাতিল রেশন কার্ডের তথ্য চাওয়া হয় ৷ তিনবার নোটিশের পর সেই তথ্য হাতে পেল ইডি ৷
রাজ্যে রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে প্রথমে উত্তর 24 পরগনার ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইডি । পরে বাকিপুরকে জেরা করে এই মামলায় তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম উঠে আসে । এরপরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়ি এবং অফিসে ম্যারাধন তল্লাশি অভিযান চালান তদন্তাকারী আধিকারিকরা ৷ সেখান থেকে বেশকিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি ৷ তার ভিত্তিতে জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করা হয় । তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে লাগাতার জেরা করে ইডি ৷ এরপরই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, রেশন দুর্নীতিতে যে শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাই যুক্ত তেমনটা নয়, বরং তার বাইরেও অনেকে যুক্ত রয়েছে ।
তারপরেই রেশন দুর্নীতি মামলায় নাম উঠে আসে উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালির 'বেতাজ বাদশা' বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের নাম । সেই মতোই ইডির আধিকারিকরা শেখ শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত 5 জানুয়ারি নেজাট থানার অন্তর্গত তাঁর বাড়িতে যান । তবে সেখানে যেতেই শেখ শাহজাহানের দলবল চড়াও হয় তদন্তকারীদের উপর । ভাঙা হয় সরকারি গাড়ি । রক্তাক্ত হতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের । কোনওমতে প্রাণ হাতে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন ইডির আধিকারিকেরা । সেই ঘটনার পর দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পরে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই ।