পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

এক বছরেও অশনাক্ত, পোড়ানো হল সিকিমের বিধ্বংসী-বন্যায় ভেসে আসা দেহগুলি - Sikkim Flash Flood - SIKKIM FLASH FLOOD

এক বছর কাটলেও শনাক্ত করা যায়নি সিকিমের বিধ্বংসী বন্যায় ভেসে আসা বেশ কয়েকটি দেহ ৷ তাই অবশেষে আইন মেনে সেই দেহগুলি পুড়িয়ে ফেলা হল ৷

ETV BHARAT
সিকিমের বিধ্বংসী-বন্যায় ভেসে আসা অশনাক্ত দেহগুলি পোড়ানো হল (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 4, 2024, 7:45 PM IST

জলপাইগুড়ি, 4 অক্টোবর: সিকিমের বিধ্বংসী বন্যার এক বছর পেরলো ৷ তবে সেই ভয়াবহ বন্যায় ভেসে আসা বেশকিছু মৃতদেহ এতদিনেও শনাক্ত করা যায়নি । তাই সেই দেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষা করে সেগুলিকে পুড়িয়ে দেওয়া হল ৷

সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় সিকিম । পাহাড়ি রাজ্য থেকে নেমে আসা তিস্তা নদীর সমতলে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন অংশে ভেসে আসে একাধিক মৃতদেহ । ঘুমের মধ্যেই তিস্তার বিধ্বংসী বন্যায় ভেসেছে বাড়িঘর থেকে শুরু করে আস্ত একটা সেনাশিবির । জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার হয় 58টি মৃতদেহ ৷ তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও বেশ কয়েকটি দেহ শনাক্ত করা যায়নি ।

সিকিমের বিধ্বংসী বন্যার এক বছর পেরলো (নিজস্ব চিত্র)

তিস্তার বন্যায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে থাকা জওয়ানদের পাশাপাশি ভেসে যায় বাহিনীর ব্যবহৃত মর্টার-সহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র ও গাড়ি । এনডিআরএফ, সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশকর্মীরা উদ্ধারকাজে নেমে তিস্তা নদী থেকে একের পর এক মৃতদেহ উদ্ধার করে । জলপাইগুড়ি জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন টাকামারি, ময়নাগুড়ি, মেখলিগঞ্জ, নাথুয়ার চর, তিস্তার ছয় নম্বর স্পার, নন্দনপুর বোয়ালমারির বাহির চর, গাজোলডোবা, ক্রান্তি ও মালবাজার থেকে উদ্ধার হয় দেহগুলি ৷ পাশাপাশি সিকিমের সিংথামের নীচে বারদাং এলাকায় বালি-পাথরের নীচে চাপা পড়া সেনাবাহিনীর গাড়িগুলিকে জেসিবি দিয়ে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ৷

গত বছর 4 অক্টোবর সিকিমে তিস্তা নদীর বিধ্বংসী বন্যার পর থেকে চলতি বছরের 22 অক্টোবর পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের এলাকায় মোট 58টি মৃতদেহ উদ্ধার হয় । তিস্তা নদীতে ভেসে আসা মৃতদেহগুলি মূলত জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের মালবাজার, ময়নাগুড়ি ও কোতোয়ালি থানা এলাকায় উদ্ধার হয় । কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে 27টি, মালবাজার থানা এলাকা থেকে 17টি ও ময়নাগুড়ি থানা এলাকা থেকে 14টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল ।

তিস্তার জলে জলপাইগুড়িতে ভেসে আসে একের পর এক দেহ (নিজস্ব চিত্র)

এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে মাত্র 14টি মৃতদেহকে শনাক্ত করা যায় ৷ শনাক্ত হওয়া 14 জনের মধ্যে 7 জন জওয়ান ও 7 জন সাধারণ নাগরিক ছিলেন । পরবর্তীতে আরও কিছু মৃতদেহ শনাক্ত করা যায় । কিন্তু একবছর হয়ে গেলেও প্রায় 30টি মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়নি ।

জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খাণ্ডবাহালে জানান, "আমাদের জলপাইগুড়ি জেলায় 25-26টি মৃতদেহের শনাক্তকরণ হয়েছে । বাকি মৃতদেহ শনাক্তকরণ করা যায়নি । আমরা মৃতদেহের বিভিন্ন ভাবে ছবি তুলে রেখেছি । পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষা করে রাখা হয়েছে । কেউ মৃতের খোঁজ করতে এলে আমরা তাঁদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ।"

বেশকিছু মৃতদেহ শনাক্ত না-হওয়ায় পুড়িয়ে দেওয়া হল (নিজস্ব চিত্র)

এদিকে, জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক সায়েন্সের বিভাগীয় প্রধান রাজীব কুমার জানান, "তিস্তায় ভেসে আসা মৃতদেহগুলো প্রায় এক বছর রাখার পর আইন মেনে মৃতদেহগুলি পোড়ানো হয়েছে ।" তিনি জানান, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জেলাশাসককে জানানো হয়েছিল । তারপর পুরসভার মাধ্যমে মৃতদেহগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details