মালদা, 15 জানুয়ারি: ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে 13টি দিন ৷ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে তদন্ত চালিয়েও মালদা শহরে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে শুট আউটের ঘটনায় সেভাবে আলো ফেলতে পারেনি পুলিশ ৷ এখনও অধরা এই কাণ্ডের অন্যতম তিন অভিযুক্ত ৷ যাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন ৷ এই রোহনের কাছেই নাকি রয়েছে হত্যাকণ্ডের মূল নকশা ৷ তেমনটাই জানাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা ৷
নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার একসময় ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান থাকলেও বর্তমানে তিনি ছিলেন একজন কাউন্সিলর ৷ তাঁর খুনের ঘটনায় কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে এডিজি সুপ্রতিম সরকার দাবি করেছিলেন, দুলাল সরকারকে খুনের জন্য 50 লাখ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল ৷ এই জায়গা থেকেই প্রশ্নের শুরু ৷ মুম্বই, দিল্লি কিংবা কলকাতা পুরনিগমের কোনও জনপ্রতিনিধি ছিলেন না তিনি ৷ একটি মফফ্সল শহরের পুরসভার সাধারণ কাউন্সিলর ছিলেন ৷ এমন একজনকে খুনের জন্য এত টাকার সুপারি দেওয়া হল কেন ?
উত্তরপ্রদেশ কিংবা বিহারের সুপারি কিলাররা নামীদামি কাউকে খুনের জন্যও এত টাকাই সুপারি পায় কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ৷ তাহলে দুলাল সরকারের ক্ষেত্রে এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা কেন ? যে বা যারা তাঁকে খুনের সুপারি দিয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ টাকার বদলে তারা কত টাকা আদায় করতে পারবে ? কোথা থেকে আদায় করবে ? দুলাল ঠিক কতটা মূল্যবান ব্যক্তি ছিলেন, যাঁকে সরিয়ে বিরাট লাভ হতে পারে ?
এসব প্রশ্নের উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছে ইটিভি ভারত ৷ বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, দুলাল সরকারের প্লাইউড ব্যবসা সাম্প্রতিক সময়ে ফুলেফেঁপে উঠেছিল ৷ তিনি ছিলেন রেলের বড় মাপের ঠিকাদার ৷ শুধু তাই নয়, রেলের মাল লোডিং-আনলোডিং এবং সেখানকার ট্রান্সপোর্ট ব্যবসার সুতো ছিল তাঁর হাতে ৷ এমনকি মালদা টাউন স্টেশনের পার্কিং, খাবারের স্টলের বিলিবণ্টনেও তাঁর হাত থাকত ৷ এর সঙ্গে ছিল জমি প্রোমোটারি ব্যবসা ৷ ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা ব্লকে অসংখ্য জমির মালিক তিনি ৷ সম্প্রতি শুরু করেছিলেন হোটেল ব্যবসাও ৷ কার্শিয়াং শহরে তিনি প্রথম হোটেল খোলেন ৷ মালদা শহরে তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে 12টি ৷ কলকাতা-সহ দেশের আরও কিছু শহরে তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরই অনুগামীদের একাংশ ৷ তাঁরা আরও জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে দুলাল সরকারের সম্পত্তির পরিমাণ তিনশো কোটি টাকারও বেশি ৷