দার্জিলিং, 24 মে: রাজ্যে এখন দারুণ দাবদাহ । তাই পর্যটকদের এখন পছন্দের জায়গা পাহাড় । গরমের দাপট থেকে একটু স্বস্তি পেতে বাংলার পর্যটকরা তো বটেই, ভিনরাজ্য থেকেও পর্যটকরা ছুটে আসছেন দার্জিলিংয়ে । যে কারণে প্রত্যেকদিন যানজট দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের রাস্তায় । কিন্তু ভোটের ফল গণনার দিন দার্জিলিংয়ের রাস্তা কার্যত শুনশান দেখা যেতে পারে । কারণ, 4 জুন ভোট গণনার দিন ট্রাফিক সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন ।
ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা । যার মধ্যে রয়েছে, বাতাসিয়া লুপ, টাইগার হিল লুপ, হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, পদ্মজা নাইডু জুলজিক্যাল পার্ক ও দার্জিলিং রঙ্গিত ভ্যালি রোপওয়ে । প্রশাসনের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দফতর ও চালক সংগঠনকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, বিভিন্ন পর্যটন সংগঠনকে বিষয়টি প্রচার চালানোর কথাও বলা হয়েছে ।
দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে বাতাসিয়া লুপের গোর্খা ওয়ার মেমোরিয়ালের দূরত্ব 6.2 কিলোমিটার । আবার গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে টাইগার হিলের দূরত্ব 23.4 কিলোমিটার । দার্জিলিংয়ে টাইগার হিলের জন্য ব্যস্ততা দেখা যায় ভোর 4টা থেকে সকাল 7টা পর্যন্ত । দার্জিলিংয়ের রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল এক নির্দেশিকা জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান । ট্রাফিক সমস্যা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত বলে নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে । কিন্তু প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে । ভরা মরশুম হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ।
যেহেতু টুরিস্ট বুকিং অনেক আগে থেকে হয়ে থাকে, তার জন্য প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করছেন ট্যুর অপারেটররা । হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "নির্বাচন এবং তার ফল ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু টাইগার হিল, দার্জিলিং চিড়িয়াখানার মতো জায়গুলি খোলা রাখা যেত । প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তের ফলে বিকল্প জায়গা নিয়ে ভাবতে হবে । বিকল্প জায়গা সম্পর্কে পর্যটকদের সঙ্গে আলোচনাও করতে হবে । পর্যটনের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মনে হয় ।"
ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্য়ুর অপারেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, "সিদ্ধান্ত অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করা উচিত । অন্যথায় আমাদের মতো পর্যটন ব্যবসায়ীদের চরম সমস্যায় পড়তে হবে । গণনা কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা বা কাছেপিঠে যে পর্যটন কেন্দ্রগুলি রয়েছে, শুধুমাত্র সেগুলি বন্ধ রাখা হলে ভালো হতো । সিকিম বিধানসভার ফল ঘোষণা 2 জুন । কিন্তু সিকিমের তরফে এখনও এমন কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি । সিকিম যদি পর্যটনকে ছাড় দিতে পারে, তবে দার্জিলিং কেন পারবে না ?"